Site icon Jamuna Television

করোনা রোগীদের সাহস জোগাতে হাসপাতালে গানের আসর

কোভিড ওয়ার্ডে চলছে গানের আসর।

মাটিরও পিঞ্জিরায় সোনার ময়না, বকুল বকুল ফুল, আমার মনও না চায় অথবা ইন্দুবালা এই গানগুলো মিশে আছে বাঙালির মনে প্রাণে। গানগুলো মাথায় আসলে চোখে ভাসে নদীর তীর, বটতলা অথবা স্কুলের মাঠে বসে বন্ধুরা একসাথে গলা ছেড়ে গাওয়া কিংবা হাটে বাজারে কোনো বাউল গানের আসর। প্রথাগত নিয়ম ভেঙে এসব গানের আসর এখন বসছে খোদ হাসপাতালে, কোভিড ওয়ার্ডে।

করোনা রোগীদের মানসিকভাবে চাঙা করতে, হাসপাতালে গানের আয়োজনের এমন ব্যবস্থা করেছে বেসরকারি হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতাল। যারা একটু একটু করে সেরে উঠছেন তাদের জন্য কোভিড ওয়ার্ড প্রাঙ্গণে বসে গানের আসর। এ নিয়ে বেশ ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন আয়োজক ও অংশ নেয়া শিল্পীরা।

রাজধানীর পান্থপথের হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কোভিড ওয়ার্ডের বারান্দায় পিপিই পরে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গাইছেন এক তরুণ। রোগী-স্বজন ছাড়াও কোভিড রোগীদের সেবা দেয়ায় দায়িত্বরত চিকিৎসক নার্সরা তন্ময় হয়ে শুনছেন তার গান। রোগীদের মানসিক বিষণ্নতা দূর করতেই এই আয়োজন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. পংকজ কান্তি সূত্রধর বলেন, এখানে কিছু ফ্যাক্টর আছে। ওষুধ দিয়ে যে চিকিৎসা তার সাথে এমন ওষুধের বাইরের থেরাপিগুলোও থাকবে। যে রোগীরা এখন সেরে ওঠার পথে আছেন তাদের নিয়েই আমরা এই আয়োজনটি করেছি। রোগীরাও বেশ সাড়া দিয়েছেন।

পিপিই পরে, যন্ত্র বাজিয়ে যাকে গান গাইতে দেখা যায় তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেহ আলী খান আকাশ। কোভিড ওয়ার্ডে গান গাইতে হবে জেনে শুরুতে একটু ভয় পেয়েছিলেন। পরে বুঝলেন রোগী-স্বজন, চিকিৎসক-নার্সদের কষ্টের মাঝে কিছুটা আনন্দ দিতে পারা জীবনের শ্রেষ্ঠ অনুভূতি।

ফাতেহ আলী খান আকাশ বলেন, প্রথমে একটু ভয় লেগেছে, তারপর বুকে সাহস নিয়ে চলে গিয়েছি তাদের গান শুনাতে। অসুস্থ মানুষেরা আমার গান শুনে সাড়া দিচ্ছেন এই ব্যাপারটি ভেবে ভেতর থেকে ভাল লাগা কাজ করে। আমার গানের কারণে যদি তাদের এক শতাংশ মনোবলও চাঙ্গা হয় তবে তাই আমার সার্থকতা।

করোনা নিয়ে চারিদিকে হাহাকার আর খারাপ খবরের মাঝে, এমন উদ্যোগ বদলে দিতে পারে রোগী-চিকিৎসক সম্পর্ক।

/এস এন

Exit mobile version