Site icon Jamuna Television

নিজের বানানো হেলিকপ্টারের পাখায় কাটলো গলা, প্রাণ গেলো যুবকের

দুর্ঘটনাস্থলে আহত ইয়ামাইল ও তার বানানো হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত

স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের বানানো হেলিকপ্টারে করে আকাশে উড়বেন, হাজারও মানুষের মন জয় করবেন, সেই হেলিকপ্টারের আঘাতেই তার প্রাণ গেলো। নিজের বানানো হেলিকপ্টারের ব্লেডে গলা কেটে মৃত্যু হলো মহারাষ্ট্রের স্কুল পালানো যুবক ইসমাইল শেখের।

পড়াশোনায় ছিলেন ভীষণ অমনোযোগী। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেন মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত গ্রাম ফুলসাওয়াঙ্গির ইসমাইল। স্কুল ছেড়ে কাজ শুরু করেন ভাই মুসাভিরের ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে। সেখানে কাজ করতে করতেই ইসমাইল নানা ধরনের আসবাব বানানোর কৌশল শিখে ফেলেন। তবে তার লক্ষ্য ছিল ভিন্ন। ভাবতেন এমন একটা কিছু করবেন যাতে ফুলসাওয়াঙ্গির নাম সারা বিশ্বে আলোচিত হয়।

ইসমাইল লক্ষ্য স্থির করেন, একটা মিনি হেলিকপ্টার বানাবেন। এক সিটের হবে সেই কপ্টার। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। দোকানের কাজের ফাকে একটু একটু করে তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া শুরু করেন। ইসমাইলের প্রিয় সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’ এর র‍্যাঞ্চো ছিল তার জীবনের আদর্শ। সেই আদর্শকেই অনুসরণ করে নিজের মিশনে নেমে পড়েন ইসমাইল।

তার স্বপ্নের হেলিকপ্টারকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজ শুরু করেন ইউটিউব দেখে দেখে। টানা দুই বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলেন এক সিটের একটি হেলিকপ্টার। মারুতি ৮০০ গাড়ির ইঞ্জিন লাগিয়েছিলেন তাতে। সবই ঠিকঠাক ছিল, শুধু অপেক্ষা ছিল উদ্বোধনের। আর এজন্য ভারতের স্বাধীনতা দিবসকেই বেছে নিয়েছিলেন ইসমাইল।

কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেয়ার আগেই মঙ্গলবার নিজের বানানো হেলিকপ্টারের আঘাতে প্রাণ গেলো ইসমাইলের।হেলিকপ্টার চড়ে আকাশে উড়াল দেয়া হলো না তার।

ইসমাইলের বন্ধু শচীন উবালে জানান, নিজের আবিষ্কার নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ইসমাইল। মঙ্গলবার রাতে হেলিকপ্টারটি পরীক্ষা করছিলেন তিনি। গ্রামের অনেক মানুষ উপস্থিত হয়েছিল তা দেখতে। হেলিকপ্টার চালু করেছিলেন ইসমাইল। হঠাৎ হেলিকপ্টারের পেছনের পাখা মূল পাখায় আঘাত করে। মূল পাখার ব্লেড ভেঙে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ইসমাইলের গলায় আঘাত করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় ইসমাইলের। ওই দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।

ইসমাইলের ডাকনাম মুন্না। তাই ভালবেসে তার হেলিকপ্টারের নাম দিয়েছিলেন ‘মুন্না হেলিকপ্টার’।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Exit mobile version