Site icon Jamuna Television

কেন কাবুল এয়ারপোর্ট পাহারা দিতে চায় তুরস্ক!

কাবুল এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা দেয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অটল তুরস্ক।

গত মাসে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর আমেরিকা কাবুল বিমানবন্দর রক্ষার প্রস্তাব দেয় তুরস্ককে, তুরস্ক সে প্রস্তাবে রাজি হলেও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তালেবানদের ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড। গত এক সপ্তাহে আফগানিস্তানের ১০টি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল করে নিয়েছে তালেবানরা। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে- তুরস্ক এখনও কাবুল এয়ারপোর্টের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে চায় কী না!

মূলত আফগানিস্তানে কর্মরত বিদেশী কূটনীতিক ও কর্মীদের নিরাপদে আফগানিস্তান ত্যাগের প্রধান রুট কাবুল বিমানবন্দর। ওয়াশিংটনের আশঙ্কা, ন্যাটো ও মার্কিন ফোর্স প্রত্যাহারের পর তালেবানদের হাতে বিমানবন্দরটির পতন হতে পারে। একারণে এয়ারপোর্টটির নিরাপত্তা নিয়ে
চিন্তিত বাইডেন প্রশাসন।

তুরস্কের বিখ্যাত সাংবাদিক ইলহান ওজগেল মনে করেন, কাবুল এয়ারপোর্ট মিশনকে আমেরিকার সাথে সুসম্পর্ক তৈরির সম্ভাব্য মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছে তুরস্ক। তিনি বলেন, আঙ্কারা ওয়াশিংটনের জন্য ভালো কিছু করে দেখাতে চায়। আঙ্কারা প্রমাণ করতে চায় যে, তুরস্ক মিত্র হিসেবে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ, যাকে চাইলেই উপেক্ষা করা যাবে না।

তবে আফগানিস্তানে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে আধিপত্য বজায়ে রাখতে ব্যর্থতা ও দেশটির রাজনীতির ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে তুরস্ক সরকার কাবুল ইন্টারন্যশনাল এয়ারপোর্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে আদৌ থাকবে কি না তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে দোটানার।

গতকাল বুধবার (১১ আগস্ট) তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তারা সহসা কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেয়ার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন না। তবে যেহেতু তালেবানরা রাজধানীর দিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসরমান, তাই তারা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) পাকিস্তান সফররত তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার বলেন, কাবুল এয়ারপোর্ট চালু রাখা খুবই জরুরি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তুরস্ক এ বিষয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা অনুমোদন করবে।

এর আগে, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর আমেরিকা কাবুল বিমানবন্দর রক্ষার প্রস্তাব দেয় তুরস্ককে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান আমেরিকার এ প্রস্তাবে সম্মতি জানালেও এর জন্য আমেরিকার লজিস্টিক, আর্থিক ও কূটনৈতিক সহযোগীতা চেয়েছেন।

তবে এর মাঝেই কাবুল বিমানবন্দরের ব্যাপারে তুরস্ককে হুশিয়ার করেছে তালেবানরা। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির বক্তব্য, তারা আফগানিস্তানে কোনো বিদেশি ফোর্স দেখতে চায় না। যদিও তালেবানদের হুমকিকে প্রশ্রয় না দিয়ে কাবুল এয়ারপোর্ট পাহারার সিদ্ধান্তে এখনও অটল তুরস্ক।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তুরস্কের বর্তমান অবস্থানের সম্ভাব্য দুটি ফলাফল হতে পারে। প্রথমত, তালেবানদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে হতে পারে তুরস্ককে। অথবা আফগানিস্তানে তালেবান হটিয়ে শান্তি স্থাপনের মাধ্যমে দেশটির জন্য ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে আঙ্কারা।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান মনে করেন, ন্যাটোর একমাত্র মুসলিমপ্রধান দেশের পরিচয় ও আফগানিস্তানের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আফগান সরকার ও তালেবানদের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে তুরস্ক।

/এসএইচ

Exit mobile version