Site icon Jamuna Television

গণদাবির মুখে পদত্যাগ করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

পদত্যাগ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহিদ্দিন ইয়াসিন।

মালয়েশিয়ার জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবশেষে পদত্যাগ করছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম মালয়েশিয়াকিনির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আগামীকাল সোমবার (১৬ আগস্ট) মালয়েশিয়ার রাজা আল সুলতান আব্দুল্লাহর বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী রেদজুয়ান মোহাম্মদ ইউসুফ। মি. ইউসুফ আজ রোববার (১৫ আগস্ট) ফ্রি-মালয়েশিয়া টুডেকে বলেন, আগামীকাল (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

রেদজুয়ান মোহাম্মদ ইউসুফ আরও জানান, মন্ত্রিসভার সদস্য ও নিজের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ইতোমধ্যেই মৌখিকভাবে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।

গত ২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে সারাক্ষণ চাপে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপ আরও বেড়ে যাওয়ায় তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরিক ও মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগ দেয়ার পর।

এ ছাড়া করোনামহামারি মোকাবেলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে।

জুলাইয়ের শেষে তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়, এর জেরে গত ৪ আগস্ট এক টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা তা যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে আস্থাভোটের আয়োজন করবেন তিনি। সে ভাষণে মুহিউদ্দিন আরও বলেছিলেন যে, সম্প্রতি আমার প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ নিয়ে কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এবং এ সম্পর্কে আমি সচেতন। এ কারণে আমি মহামান্য রাজাকে বলেছি। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান ও আইনি প্রক্রিয়া মেনে পার্লামেন্টে আস্থাভোট হওয়া জরুরি।

আগামী সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট সেশন শুরু হলে এই আস্থাভোটের আয়োজন হবে। এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং আমি তা গ্রহণ করছি। কারণ, পার্লামেন্টের অধিকাংশ আইনপ্রণেতার সমর্থন আছে আমদের সাথে।

কিন্তু গত শুক্রবার এক পার্লামেন্ট অধিবেশনে মুহিউদ্দিন প্রথমবারের মতো স্বীকার করেন যে আইনসভায় তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। পাশাপাশি আইনপ্রণেতাদের তিনি প্রস্তাবও দেন— আগামী সেপ্টেম্বরে আস্থাভোটে তাকে সমর্থন দেয়া হলে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে যেসব প্রতিশ্রুতি তিনি ইতিপূর্বে দিয়েছিলেন, সেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তার ওই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখ্যান করা হয়।

২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকাইয়েতের সদস্যদের ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে সারাক্ষণ চাপে ছিলেন তিনি।

/এসএইচ

Exit mobile version