Site icon Jamuna Television

যেকোনো সময় সহিংস হয়ে উঠতে পারে তালেবান

শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিলেও তালেবানের ওপর ভরসা করতে পারছেন না সাধারণ আফগানরা।

তালেবানের আশ্বাস সত্ত্বেও শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না দোভাষী হিসেবে বিদেশি বাহিনীর সাথে কাজ করা আফগানরা। তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর দেশটিতে অবস্থান করা পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায়, বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়া এসব দোভাষীরা। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের দাবি, যতই শান্তি আর স্থিতিশীলতার কথা বলা হোক, যেকোনো সময় সহিংস হয়ে উঠতে পারে তালেবান।

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর, কাবুল বিমানবন্দর থেকে ব্রিটিশ বাহিনীর সহায়তায় আফগানিস্তান ছাড়তে সক্ষম হন জিয়াউল্লাহ ওমর। দীর্ঘ সময় ব্রিটিশ বাহিনীর দোভাষী এবং কর্মী হিসেবে কাজ করায় তালেবানের চক্ষুশুলে পরিণত হন। তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্রিটেনে আসতে পারায় কৃতজ্ঞতা জানালেন ব্রিটিশ সরকারকে।

সাবেক দোভাষী জিয়াউল্লাহ ওমর বলেন, ২০১৩ সাল থেকেই আমি তালেবানের টার্গেটে পরিণত হই। ওই বছর তারা আমার ছেলেকে হত্যা করে। এবার আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসায় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী এবং সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

তবে জিয়াউল্লাহর মতো নিশ্চিত হতে পারেননি আরেক দোভাষী হামিদুল্লাহ খান। মার্কিন বাহিনীর সাথে দোভাষী হিসেবে কাজ করা এই আফগান তার মা’কে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও আফগানিস্তানে এখনও রয়ে গেছে তার বোন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি জিমের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা হামিদুল্লাহর আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে তালেবানের নৃসংশতার শিকার হতে পারে তার বোন।

হামিদুল্লাহ খান বলেন, তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কিছুদিন আগে আমি যুক্তরাষ্ট্রে আসি। বোনকে আনার বিষয়টি তখন প্রক্রিয়াধীন ছিলো। কিন্তু তালেবান এত দ্রুত সবকিছু দখল করে নেবে সেটা কেউই ভাবতে পারেনি। এখন বোনের জন্য খুবই চিন্তা হচ্ছে। কারণ তালেবান যত আশ্বাসই দিক না কেন, তাদের নৃশংস ও ভয়ঙ্কর রূপ আমরা আগে দেখেছি।

একই চিত্র স্পেনের সামরিক বাহিনীর সাথে কাজ করা দারবিশ মোহাম্মদির ক্ষেত্রেও। কয়েক বছর আগে স্ত্রী’সহ স্পেনে যান তিনি। তবে আফগানিস্তানে এখনও রয়ে গেছেন তার মা এবং বোন। সাবেক এই দোভাষীর আশঙ্কা তালেবান অপহরণ করতে পারে তার বোনকে।

দারবিশ মোহাম্মদি জানান, আমার বোনের বয়স মাত্র ১৮ বছর। যখন খবরে দেখলাম অল্প বয়েসী মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান তখন থেকে চরম দুঃশ্চিন্তায় আছি। কারণ এর আগেরবারও অল্প বয়সী মেয়েদের ধরে নিয়ে জিহাদিদের সাথে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছিলো।

এ অবস্থায় তালেবানের নতুন ঘোষণা আফগানিস্তান ছাড়তে পারবে না আফগানরা। ফলে শঙ্কা আরও বেড়েছে দেশটিতে এবং দেশের বাইরে থাকা আতঙ্কিত আফগানদের।

/এসএইচ

Exit mobile version