তার জন্ম ২০০১ সালে। মার্কিন সন্তান রাইলি ম্যাককুলামের জন্মসালেই ঘটে গেছে তার দেশের ইতিহাসে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যায়ে শতাব্দীর অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত ঘটনা, নাইন ইলেভেন। এরপর আফগানিস্তানে যখন যুদ্ধ শুরু করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, স্বাভাবিকভাবেই রাইলি ছিলেন শিশু। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হয়েছে, ২০ বছর সময়কালীন দীর্ঘ এই যুদ্ধের সর্বশেষ হতাহতদের একজন হলেন সেই রাইলি। যুদ্ধের সূচনায় জন্ম যে শিশুর, যুদ্ধের শেষভাগে সৈন্য হিসেবে ঘটলো তার জীবনাবসান।
রাইলি ম্যাককুলাম আফগানিস্তানে অবতরণ করেছিলেন তার মেরিন ইউনিটের সাথে। তার বাবা ম্যাসেজিং অ্যাপে রাইলির নামের পাশে সবুজ সঙ্কেত দেখে ধারণা করেছিলেন, ছেলে অনলাইনে আছে, ঠিক আছে। কথা আর হয়নি তাদের।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনা নিহত হবার খবর প্রকাশের পর রাইলির বাবা দেখেন, ছেলের নামের পাশে তখনও আছে সবুজ সঙ্কেত। রাইলিকে ক্ষুদে বার্তা পাঠান তার বাবা, তুমি ঠিক আছো? কিন্তু দেখতে পান, সবুজ সঙ্কেতটি হারিয়ে গেছে।
নিহত মার্কিন সেনাদের একজন হয়ে ততক্ষণে আসলে হারিয়ে গেছেন রাইলি। আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের একক ঘটনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মার্কিনি নিহতের ঘটনার একজন হয়ে গেছেন তিনি।
রাইলিকে স্মরণ করে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করছেন তার বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে স্বজনরা। সে সব ছবিতে দেখা যায়, ফুটবল কিংবা রেসলিং খেলছেন রাইলি। রেসলিং কোচও হতে চেয়েছিলেন তিনি।
পরিবারসূত্রে জানা গেছে, মেরিন হতে পারবেন কিনা সে কথা জানার আগে ছোটবেলা থেকেই যেন মেরিন হয়ে গেছিলেন রাইলি। খেলনা রাইফেল নিয়ে বলতেন, বড় হয়ে শিকারী নয়তো মেরিন হবেন তিনি। শেষে মেরিন হয়েছিলেন তিনি। খুব দ্রুতই হতে যাচ্ছেন বাবা। স্ত্রী জন্ম দিতে যাচ্ছেন সেই সন্তানকে, যাকে কোনোদিন দেখবেন না রাইলি।
/এমই

