Site icon Jamuna Television

আজ বাকের ভাইয়ের ফাঁসি

ছবি: সংগৃহীত।

আজ বাকের ভাইয়ের ফাঁসি। সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে এই রায়ের বিরুদ্ধে। ‘কুত্তাওয়ালীর ফাঁসি চাই, বাকের ভাইয়ের মুক্তি চাই’ এই শ্লোগানও উঠছে বিভিন্ন জায়গায়।

‘নাটক’ ছোট্ট একটি শব্দ। মানুষের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি বলা হয়ে থাকে নাটককে। তবে শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, সমগ্র দেশের মানুষ বিক্ষোভে নেমেছেন একটি নাটকের কাল্পনিক চরিত্রকে বাঁচানোর জন্য এটি খুবই বিরল।

কিন্তু আমাদের দেশেই ঘটেছিলো এমন ঘটনা। বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে অন্যতম কালজয়ী একটি নাম ‘কোথাও কেউ নেই’। বিশেষ করে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র বাকের ভাই। এই চরিত্রটি তৎকালীন সময়ে তরুণ তরুণীদের মধ্যে রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। নব্বই দশকের শুরুতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ধারাবাহিক প্রচার হয় নাটকটি। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত নাটকটি পরিচালনা করেন বরকত উল্লাহ।

মূলত এই নাটকের প্রধান চরিত্র বাকের ভাইয়ের জন্যই নাটকটি কালজয়ী হতে পেরেছে বলে মনে করেন অনেকেই। যে চরিত্রে অভিনয় করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন, তিনি আসাদুজ্জামান নূর।

১৯৯৩ সালে ২২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় ‘বাকের ভাইয়ের’ ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তখন নাটকে নয়, বাস্তবেই ‘বাকের ভাইয়ের’ ফাঁসি রুখতে আন্দোলন হয়েছিল।

ঘটনাচক্রে নাটকের ‘বাকের ভাই’ সহ সবকটি চরিত্র মানুষের হৃদয়ে দাগ কাটে। দুই বছর ধরে চলা নাটকটি টিভি দর্শকদের মনে এতোটাই স্পর্শ করে যে, এক পর্যায়ে ‘বাকের ভাইয়ের’ ফাঁসি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না দর্শকরা।

বাকের ফাঁসি হোক-এটা কেউ চায় না, সবাই তার মুক্তি চায়। মুক্তির দাবি জানিয়ে তখন মিছিল করেছিল চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের ছাত্ররা নিউ মার্কেটের মোড়ে, মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা র‍্যাগ দিবসে, মিছিল হয়েছিল ঢাকায়, খুলনায়, রাজশাহীতে, ময়মনসিংহে।

দেয়াল লিখন হয়েছিল ‘বাকের ভাইয়ের মুক্তি চাই’, নাট্যকারের বাসার সামনে পোস্টার লাগানো হয়েছিল, ‘কুত্তাওয়ালীর ফাঁসি চাই, বাকের ভাইয়ের মুক্তি চাই’ একটি নয়, দুটি নয়, গুণে গুণে ৮০০ টি চিঠি পৌঁছেছিল হুমায়ূন আহমেদের ঘরে এবং ফোনে হুমকি দেয়া হয়, বাকেরের কিছু হলে… কিন্তু নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ এসবের তোয়াক্কা না করে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি দিয়ে দেন।

Exit mobile version