Site icon Jamuna Television

যুগ পেরুলেও টাকা ফেরত পায়নি ‘যুবক’এর গ্রাহকরা

এক যুগেরও বেশি সময় কেটে গেলেও শুকায়নি ক্ষত। ভালো কিছু হবে, এমন প্রত্যাশায় যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি, ‘যুবক’এ অর্থ বিনিয়োগ করে এখন নিঃস্ব লাখ লাখ মানুষ। তিনটি কমিশন গঠন করেও কোনো সুরাহা হয়নি। টাকা ফেরত পাচ্ছেন না কেউই।

অভিযোগ উঠেছে, এতকিছুর পরও গোপনে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে যুবক কর্তৃপক্ষ। সম্পদ বিক্রি ছাড়াও চালু করা হয়েছে শিল্প উৎপাদন। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ৩০ কাঠা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ইউনিক বুট অ্যান্ড টারপুলিন ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেড। এই শিল্প পার্কের মালিক যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি বা যুবক। যুবকের কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলেও এখানে চলছে উৎপাদন। নেপথ্যে থেকে এই সম্পদ ভোগ করছে যুবক কর্তৃপক্ষ।

৫৩/১ পল্টনের একটি চারতলা বাড়ির মালিকও যুবক। কিন্তু এখন যারা এখানে থাকেন, তারা বলছেন ভিন্ন কথা। এলাকাবাসীর ধারণা, গোপনে জমিসহ এই বাড়িটি বিক্রি করেছে যুবক।

অবৈধ ব্যাংক ব্যবসার মাধ্যমে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে আমানত নেয়া প্রতিষ্ঠান যুবক এভাবেই হাতবদল করেছে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা তাদের সম্পত্তি। আর এতে ভুক্তভোগীদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আরও শঙ্কার মুখে পড়ছে।

এর আগে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক যুবকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তারপর এক দশকের বেশি সময় অর্থ ফিরে পায়নি কেউ।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে, বৃদ্ধ মোজাম্মেল হোসেন এখন ক্লান্ত। যুবকে খুইয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা। এর ফেল পারিবারিক জীবনেও নানা জটিলতায় পড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এছাড়া পাওনাদারদের চাপে মুন্সিগঞ্জ ছেড়েছেন ৩৫ বছরের যুবক জাকির হোসেন। পাওনাদারদের এমন গল্পের যেন শেষ নেই। কর্মসংস্থান তো দূরের কথা সহায়-সম্বল হাতছাড়া হয়ে তারা এখন নিঃস্ব।

তবে গ্রাহকদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে গঠন করা কমিটি। এরপরে সাবেক যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় যুবক কমিশন। এছাড়াও আন্তঃমন্ত্রনালয় কমিটি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দায় দেনা নিরুপণ এবং তা পরিশোধে প্রশাসক নিয়োগের পরামর্শ দেয় সবাই। কিন্তু ফলাফল শূন্য বলে জানালেন, যুবক ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মুকুল।

যুবকের কাছে তিন লাখ ৩ হাজার গ্রাহকের পাওনা দুই হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা।

নিবন্ধন না নিয়েই ১৯৯৪ সাল থেকে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে যুবক। ১৯৯৭ সালে ২০ ধরনের ব্যবসা শুরু করে প্রতারক এই প্রতিষ্ঠান।

Exit mobile version