Site icon Jamuna Television

চলনবিলের মাঝখানে ফুটো চালার যে দ্বীপস্কুল

চারদিকে পানি মাঝখানে এক টুকরো মাটি। উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় জলাঞ্চল চলনবিলের মধ্যে দ্বীপের মত মাথা তুলে থাকা সেই ভূমিতে জরাজীর্ণ ঘর। আর এই ঘরটি একটি স্কুল। পাবনার চাটমোহরে চলন বিলের ঠিক মাঝখানে মাঝে অবস্থান স্কুলটির। সকাল হলেই কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে ২৬ হাত দৈর্ঘ্যের টিনের চালা। প্রতিষ্ঠার পর তিন দশক ধরে এখানেই পাঠদান চলছে চাটমোহরের দয়রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শিশু শিক্ষার্থীরা জানালো, ঝড়-বৃষ্টির দিনে ভোগান্তি পেরিয়ে যেতে হয় স্কুল। ফুটো চালা দিয়ে পানি পড়ে, কাঁদায় মাখামাখি থাকে স্কুলের আঙিনাও।

বছরে ৬ মাস পানি থাকে বিলের এই অংশে। তাই এই সময়টায় স্কুলে যাতয়াতে নৌকাই একমাত্র ভরসা শিক্ষার্থীদের। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী নিজেরাই নৌকা চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসাযাওয়া করে। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় স্কুল ঘরে পানি ওঠায় বন্ধ থাকে পাঠদান। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো টয়লেটও। ফলে শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে মেয়েদের ভোগান্তি অবর্ণনীয়। পানির দিনে স্কুলটিতে উঠে আসে সাপখোপ আর নানান পোকামাকড়। আর তা নিয়েই দয়রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীকে পড়াশোনা করতে হয়।

২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হলেও মেলেনি নতুন ভবন। বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়ে মিলেছে শুধুই আশ্বাস। স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদও জানালেন শিশুদের ভোগান্তির কথা। তিনি বললেন, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সবার ভালোর জন্য স্কুলটির অন্তত একটি ভালো ভবন প্রয়োজন।

তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মাহবুবুর রহমান বলছেন, নতুন একটি স্কুল ভবনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের রুটিনওয়ার্ক অনুযায়ী খুব শীঘ্রই স্কুলটিসহ অন্যান্য স্থানীয় অন্যান্য স্কুলগুলোর জন্য ভবন তৈরির কাজ শুরু হবে।

Exit mobile version