Site icon Jamuna Television

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রতীক, কে এই মারিয়া রেসা?

নোবেল শান্তি ২০২১ বিজয়ী মারিয়া রেসা, ছবি: সংগৃহীত।

মামলা, হুমকি ও গ্রেফতার- এই তিনই ছিল ২০২১ সালের শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মারিয়া রেসার জীবনের সঙ্গী। তবুও থামাননি কলম। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে অদম্য এক যোদ্ধা, কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব কণ্ঠস্বরের আরেক নাম মারিয়া রেসা।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টার জন্য তিনি এ বছর রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভের সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।

মারিয়া রেসার সাংবাদিকতার শুরু ১৯৮৬ সালে। তখন থেকে ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেকে সচল রেখেছিলেন তিনি। একজন প্রতিবেদক হিসেবে যতটা খ্যাতি অর্জন সম্ভব, তার কিছুই অধরা থাকেনি তার জীবনে।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখার জন্য তিনি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইট ‘র‍্যাপলার’।

মাদক নির্মূলে সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানসহ কর্তৃত্ববাদী দুতার্তেকে নিয়ে একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনপ্রকাশিত হতে থাকে এই ওয়েবসাইটে। এরই ফলশ্রুতিতে দুতার্তে সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি। মারিয়া রেসার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেয়া হয়। আসতে থাকে একের পর এক হুমকি।

রেসার নামে দুতার্তে সরাসরি নানা বিরূপ মন্তব্য করতে থাকেন, আক্রমণ করেন। এমনকি তিনি রেসার প্রতিষ্ঠিত র‍্যাপলারকে ‘ভুয়া সংবাদমাধ্যম’ আখ্যায়িত করেন। বিদেশি নাগরিকদের বিনিয়োগ, কর ফাঁকি, মানহানিকর সংবাদ প্রকাশসহ একের পর এক অভিযোগের মামলা দেয়া হয় তার বিরুদ্ধে।

২০১৮ সালে মারিয়া রেসাকে মার্কিন সাময়িকী টাইমের ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে ঘোষণা করে। পরে দুতার্তে সরকারের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর রেসার পক্ষে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক জনমত।

গত বছর এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রেসা বলেন, কাউকে না কাউকে ঝুঁকি নিতেই হয়, সাহস দেখাতে হয় যাতে করে সতীর্থরা তাদের কাজ এগিয়ে নিতে পারেন।

রেসা বলেন, সময়ের সাথে সাথে আমরা আরও দুর্বল হয়ে যাব। কিন্তু আমাদের কলম শক্ত হাতে ধরে রাখতে হবে। আমি প্রেসিডেন্টের বিপক্ষে নই, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

তার “হোল্ড দ্য লাইন” মন্তব্যটি পরে বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের সমর্থনে এটি হ্যাশট্যাগ হিসেবে গৃহীত হয়

রেসা ১৯৬৩ সালে ফিলিপাইনে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু পরে ১০ বছর বয়সে তার পিতা-মাতার সাথে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন।

Exit mobile version