Site icon Jamuna Television

মাদ্রাসা ছাত্রীর দু’পায়ের রগ কেটে দিলো সাবেক স্বামী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে রায়হানা আক্তার নুছরাত (২২) নামে এক মাদ্রসা ছাত্রীর দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে সাবেক স্বামী। এ ঘটনায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে রায়হানা আক্তার নুজরাতে মা হাজেরা খাতুন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটিতে স্বামীসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। গুরুতর আহত অববস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই মাদ্রসা ছাত্রী। তবে এখনো এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

মামলার এজহারে বলা হয়, গত চার বছর আগে জেলার সরাইল উপজেলার শাহ্বাজপুর গ্রামের ইসমাঈল মিয়ার মেয়ে রায়হানা আক্তারের সাথে একই গ্রামের মৃত মব্বত আলী ছেলের কামরুল মিয়ার বিয়ে হয়। পরে রায়হানা আক্তার নুজরাতের পরিবারে লোকজন জানতে পারেন কামরুল মিয়া একজন মাদকাসক্ত। সে প্রায়ই যৌতুকের জন্য রায়হানাকে মারধর করত। কামরুল পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রায়হানার পরিবারের কাছে। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় রায়হানার উপর শারীরিক নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এসব সহ্য না করতে না পেরে গত সাত মাস আগে রায়হানা আক্তার নুজরাত নিজেই কামরুল মিয়াকে তালাক দেন। এরপর স্থানীয় শাহ্বাজপুর হাজীপাড়া মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি হয় সে। তবে তালাকের পরও রায়হানা আক্তার নুজরাতে পিছু ছাড়েনি কামরুল মিয়া। মাদারাসায় আসা-যাওয়ার পথে রায়হানাকে উত্যক্ত ও ভয়ভীতি দেখাত কামরুল মিয়া। আবার পুনরায় সংসার করার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ১৩ মার্চ সকালে রায়হানা মাদারাসায় যাওয়ার পথে স্থানীয় হাবলিপাড়া মসজিদের সামনে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কামরুলসহ আরও কয়েকজন তাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায়ে তারা রায়হানার আক্তার নুজরাতে দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে বুধবার দুপুরে ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সরাইল থানায় সাবেক স্বামী কামরুল মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।

রায়হানা আক্তার নুজরাতে মা হাজরা খাতুন বুধবার বিকালে জানান, ওর (কামরুল) যন্ত্রণায় আমার মেয়ে সংসার ত্যাগ করেছে। তারপরও আমার মেয়েকে শান্তি দিচ্ছে না। আামি আমার মেয়ের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল থানা ভারপ্রার্প্ত কর্মকর্তা মো. মফিজ উদ্দিন ভুইয়া বুধবার সন্ধ্যায় জানান ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা সাথে সাথেই মামলা নিয়েছি। আসামি গ্রেফতারে নিয়মিত অভিযান চলছে।

Exit mobile version