Site icon Jamuna Television

নৌকাতেই যাদের জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তারা পেলো স্থায়ী ঠিকানা

মানতাদের জীবন চলে জোয়ার-ভাটার ছন্দে। আজ এক ঘাটে, তো কাল আরেক ঘাটে। সংগৃহীত ছবি।

নেই নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত মানতা সম্প্রদায়। নৌকায় জন্ম তাদের নৌকাতেই মৃত্যু। যাযাবর সম্প্রদায় মানতার ২৯টি পরিবারের অবশেষে স্থায়ী ঠিকানা মিলছে পটুয়াখালীতে। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে তাদের জন্য নির্মাণ হচ্ছে পাকা ঘর।

মানতাদের জীবন চলে জোয়ার-ভাটার ছন্দে। আজ এক ঘাটে, তো কাল আরেক ঘাটে। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে সবই নৌকায়। মুসলিম এই জনগোষ্ঠীর পরিচিতি মানতা সম্প্রদায় হিসেবে। পটুয়াখালীতে মানতা সম্প্রদায়ের বসবাস তিন দশক ধরে। নদী আর সাগরে মাছ ধরাই তাদের জীবিকা। নির্দিষ্ট ঠিকানা না থাকায় নাগরিক অধিকার বঞ্চিত এই জনগোষ্ঠী। এমনকি মৃত্যুর পর মরদেহও ভাসিয়ে দেয়া হয় নদী কিংবা সাগরে।

দীর্ঘদিন পর হলেও অবশেষে পটুয়াখালীতে স্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছে মানতা সম্প্রদায়ের ২৯টি পরিবার। তাদের জন্য রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ ইউনিয়নে নির্মাণ করা হচ্ছে ২৯টি ঘর। এতে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছে এই জনগোষ্ঠী। তাদের জন্য স্থায়ী ঠিকানা নির্মাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। তাদের জন্য ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানালেন রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

এছাড়া, মানতা সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য চালু হয়েছে একটি বেসরকারি স্কুল। এই জনগোষ্ঠীর সবাইকে স্থায়ী ঠিকানা দিতে পারলে তাদের জীবনধারা পাল্টে যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।

গেলো জানুয়ারিতে ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে এখানকার মানতা সম্প্রদায়ের প্রাপ্তবয়স্কদের। জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনে এই সম্প্রদায়টির পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। এই ধারাটি অব্যাহত রাখতে পর্যায়ক্রমে সবাইকেই ঘর দেয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান।

প্রসঙ্গত, পটুয়াখালীতে বিভিন্ন নদ-নদীর ঘাটে বাস করে মানতা সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক পরিবার।

Exit mobile version