Site icon Jamuna Television

ই- সিগারেট কি আসলেই নিরাপদ?

ছবি: সংগৃহীত।

বিশ্বে ধূমপানের একটি জনপ্রিয় বিকল্প ই-সিগারেট। অনেকেই ধূমপান ছাড়ার একটি উৎকৃষ্ট বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেটকে বেছে নিতে চান। কিন্তু পূর্ববর্তী ধারণার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর ই-সিগারেট।

ই-সিগারেটের ক্ষতি সম্পর্কে অন্যদের সচেতন করতে হাসপাতালের বেডে শুয়েই একটি ক্যাম্পেইন করেন সিমা হেরম্যান। নিউমোনিয়া ও ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল।

লেনক্স হিল হাসপাতালের ড. রবার্ট গ্ল্যাটার বলেন, আমার মতে, বাবা-মা এবং অল্পবয়সীদের ভেপিং এর ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। এটা খুবই ভয়ঙ্কর। এটা শুধু নিকোটিনে আসক্ত করেই তোলে না, সেই সাথে হৃদপিণ্ড ও রক্তের চাপ বাড়িয়ে দেয়। যা ফুসফুসের ক্ষতি করে।  

ই-সিগারেটের ভেতরে থাকা তরল পদার্থ এবং ধোঁয়া অনেক সময় এমন সব ক্ষতিকর রাসায়নিক বহন করতে পারে, যা সাধারণ সিগারেটের ভেতরেও থাকে। তবে এর মাত্রা অনেক কম।

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা এর আগে ছোট কয়েকটি পরীক্ষায় দেখেছেন, এ ধরনের ধোঁয়া গ্রহণ বা ভ্যাপিং শরীরের ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে পারে।

বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর ডেভিড থিকেট একটি গবেষণায় বলেন, ভ্যাপিং বা ই-সিগারেট ব্যবহারের ফলে ফুসফুসের রোগপ্রতিরোধকারী কোষ অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং প্রদাহের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

এর আগে ই-সিগারেট নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে, সেগুলো ছিল এর মধ্যকার তরল রাসায়নিক মিশ্রণটি নিয়ে। প্রোফেসর ডেভিড থিকেটের গবেষণায় ৮ জন অধূমপায়ীর ফুসফুসের টিস্যুর নমুনাতে অনুমাননির্ভর পরীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, ভ্যাপিংয়ের ফলে ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া ও অ্যালার্জি প্রতিরোধকারী কোষের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। 

গবেষকরা বলেন, নিয়মিত স্মোকার ও দীর্ঘকালস্থায়ী ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও একইরকম লক্ষণ দেখা দেয়।

প্রফেসর থিকেট বলেন, ই-সিগারেট প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় নিরাপদ হলেও এর ক্ষতিকর দিক ব্যাপক। এতে হয়তো ক্যানসারের ঝুঁকি কম। কিন্তু আপনি ২০ অথবা ৩০ বছর ধরে ই-সিগারেট ব্যবহারে ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী রোগ হতে পারে। 

আমেরিকান ভেপিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গ্রেগরি কনলি বলেন, ধূমপানের চেয়ে ভেপিং শুধু ৯৫ শতাংশ নিরাপদই নয়, এটা ধূমপায়ীদের জন্য ভালো একটি বিকল্প। এসব অসুস্থতা আর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে কালোবাজারে মাদক ব্যবসায়ীদের বিক্রি করা পণ্যের কারণে।

Exit mobile version