Site icon Jamuna Television

নেতিবাচক মনোভাব ও পাওয়ার হিটারের অভাব ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে

এমন ব্যাটিংয়ের উত্তর হয়তো খুঁজে বের করবেন সাকিব। ছবি: সংগৃহীত

ফলাফল বলবে, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ফলাফল বা পরিসংখ্যান বলবে না, ১৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর থেকে দলের সেরা দুই খেলোয়াড় সাকিব ও মুশফিকের অতি সতর্ক মানসিকতায় প্রতি ওভারেই একবার করে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

দুই ওপেনারের আউট হবার ধরন আসবে তার আগে। ওপেনার সৌম্য সরকার তো জশ ডেভি আর কাইল কোয়েটজারের বুদ্ধির চ্যালেঞ্জেই গেলেন হেরে! ডিপ স্কয়ার লেগে কোনো ফিল্ডার না রেখে সেখান দিয়ে চার মারার সুযোগ দেয়া হয়েছে সৌম্যকে। চার মেরেছেনও সৌম্য। তারপর সেখানে ফিল্ডার আনলেন কোয়েটজার আর ডেভি বল করলেন একই লাইনে। স্কটিশরা প্ল্যান পরিবর্তন করলেও সৌম্য সরকার এতোকিছু ভাবেননি বোধহয়। নইলে আবারও হাওয়ায় ভাসিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে খেলার আগে দেখে নিতে পারতেন, সেখানে বাউন্ডারিতেই আছেন দুজন ফিল্ডার।

হাত খুলে খেলার জায়গা দিচ্ছিলেন না ডেভি, শেরিফরা। গ্যাপ খুঁজে বের করতেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন লিটন দাস। মিসটাইমিং করে মিড অফে ক্যাচ তুলে দলের প্রাথমিক বিপর্যয়ই কেবল নিশ্চিত করতে পারলেন লিটন।

মুশফিকুর রহিম যখন ব্যাট করতে নামেন তখন ৩.৩ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের রান ১৮। সাকিব ক্রিজে ছিলেন ৯ বলে ৮ রান নিয়ে। দুজনের অতি সাবধানী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রান এক সময় দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৩৪। অর্থাৎ, জুটির প্রথম ২৭ বলে রান এসেছে মাত্র ১৬! টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ে এমন মনোভাব দেখানোর পর সেই ম্যাচ বের করে আনা বেশ কঠিন হয়ে যায়। সাকিব-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররা সিঙ্গেল- ডাবলসের উপর নির্ভর করে স্ট্রাইক পরিবর্তন করতে পারছেন না, এটা দেখাও সমর্থকদের জন্য হতাশাজনক। ১১ ওভারেই প্রথমবারের মতো লেগি ক্রিস গ্রিভসকে আনা হলো আক্রমণে। তার শর্ট অব লেংথের বল সীমানা ছাড়া করতে গিয়েই বাউন্ডারি লাইনে ম্যাকলয়েডের ক্যাচ হয়ে ২৮ বলে ২০ রান করে আউট হন সাকিব। মাত্র ১ টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৭১.৪২ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে এই চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডারকে।

সাকিবের আউট থেকে শুরু করে পরবর্তী আউটগুলো হবার ধরনে ধরা পড়লো আরেক দুর্বলতা, পাওয়ার হিটিংয়ে সামর্থ্যের অভাব। মুশফিক বাদে বাকি সবাই যেমন, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ, সোহান আউট হয়েছেন ছয় মারতে গিয়ে। কিন্তু বাউন্ডারি রোপ পার করতে না পেরে সবাই একে একে ধরা পড়েছেন বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডারের হাতে। অথচ ওভার বাউন্ডারির উপর নির্ভর করে ম্যাচ জয়ের মতো টার্গেট তো স্কটল্যান্ড দেয়নি বাংলাদেশকে। ওভার পিছু ৭ রান করে নেয়া দরকার ছিল জয়ের জন্য। আফিফ-মেহেদিদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়নি ব্যাট করার জন্য সাকিব-মুশফিকদের ভয়ঙ্কর পরীক্ষা নিয়েছে ওমান ক্রিকেট গ্রাউন্ডের উইকেট। বরং, সাকিব আউট হবার সময়ও বাংলাদেশের রান রেট ছিল প্রায় ৬ ছুঁইছুঁই। কিন্তু তাদের ব্যাট করার মধ্যেই প্রচ্ছন্নভাবে উঁকি দিচ্ছিল উইকেট হারিয়ে ফেলার ভয়। যা পরবর্তীতে হয়তো আবেশ প্রক্রিয়ায় সংক্রমিত হয়েছে অন্যান্য ব্যাটারদের মধ্যেও।

৫৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরেও যে লড়াকু মানসিকতা দেখিয়েছে স্কটল্যান্ড, সেই মনোভাবের ধারেকাছেও কাল ছিল না বাংলাদেশ। স্কটিশদের ভয়ডরহীন ক্রিকেটের সামনে প্রথম থেকেই জড়সড় হয়ে থাকা বাংলাদেশ বরং ম্যাচটি জিতলেই হতো বিস্ময়কর ব্যাপার। তাই পরিসংখ্যানের ৬ রান প্রকাশ করতে ব্যর্থ, মানসিকতাই বাংলাদেশকে কতোটা পিছিয়ে দিয়েছিল এই ম্যাচে।

এম ই/

Exit mobile version