Site icon Jamuna Television

বিক্ষোভে ফুঁসছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়: এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ:

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার অভিযোগে শিক্ষিকা ফারহানার ইয়াসমীন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিন আজ। এরই মধ্যে একজন আন্দোলনকারী বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

এর আগে ২২ তারিখ শুক্রবার পূর্বনির্ধারিত নোটিশ ছাড়াই সিন্ডিকেট সভা বসে বিশ্ববিদ্যালয়টির। চুল কাটার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি হয় সেই সভা।

তারই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত শিক্ষিক ফারহানার ইয়াসমীন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে গত শনিবার থেকে আমরণ অনশনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আবু জাফর জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। এরপর ওনারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সেই বৈঠক।

এদিকে আন্দোলনের এক পর্যায়ে গতকাল রাতে তিন শিক্ষার্থী আল্টিমেটাম দিয়েছিল, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামীকাল (আজ) রোববার বেলা বারোটায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে তারা। তাদেরই একজন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আজ। চিকিৎসকেরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাকে।

চুল কাটার ঘটনায় অন্যতম ভুক্তভোগী ও আন্দোলনকারী একই বিভাগের সিরাত যমুনা নিউজকে বলেন, ঘটনার বিচারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কাছে সময় চেয়ে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রমে ফিরে যেতে বললেও আমরা অস্বীকৃতি জানিয়েছি। তাদের নানা রকম টালবাহানায় আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলছি।

তিনি আরও বলেন, ঐ শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন হিমেলকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার ব্যাপারে শীঘ্রই যদি কোনো সিদ্ধান্ত জানানো না হয়, তবে কাল থেকে সিরাজগঞ্জ-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা।

এদিকে রোববার সকালে তদন্ত কমিটির প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান, তাদের সাথে কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আন্দোলন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন শিক্ষক ও রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতনই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেনি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বষের্র ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

এ বিষয়ে আজ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।

Exit mobile version