Site icon Jamuna Television

বীমার টাকা পেতে পাগলকে হত্যা করে নিজের মৃত্যুর নাটক সাজালো ভারতীয়

সাপে-কাটায় মৃত্যুর নাটক সাজিয়ে বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার দাবি করে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক ভারতের মহারাষ্ট্রের এক ব্যক্তি।

৫৪ বছর বয়সী সেই প্রতারকের নাম প্রভাবক ভিমাজি ওয়াঘচরে। ২০ বছর পর এ বছরের জানুয়ারিতে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। ২২ এপ্রিল আহমেদনগরের রাজঘুর গ্রাম থেকে সেই প্রভাকরের মৃত্যুর খবর পায় পুলিশ।

ময়নাতদন্তে সেই মৃত্যুর কারণ দেখানো হয়েছিল ‘সাপের কামড়’! হর্ষদ লাহামগে ও প্রবীণ নামে গ্রামের দুজন বাসিন্দা নিজেদেরকে প্রভাবকের ভাইপো দাবি করে লাশটি শনাক্ত করে।

পরে তারাই যখন কথিত চাচার হয়ে বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ দাবি করে, তখন প্রতিষ্ঠানটি যোগাযোগ করে ভারতের স্থানীয় পুলিশ দপ্তরে। এমনকি তাদের একজন এজেন্ট ভারতে এসে প্রভাকরের বাড়িও ঘুরে যান। তখনই বেরিয়ে আসে সেই চাঞ্চল্যকর তথ্যটি- প্রভাকর আসলে মিথ্যা মৃত্যুর নাটক সাজিয়েছেন!

প্রভাবকরের ব্যাপারে এই ‘অতিরিক্ত’ অনুসন্ধানের কারণ হলো তার অতীত প্রতারণার রেকর্ড। ২০১৭ সালে জীবিত স্ত্রীকেও ‘মৃত’ সাজিয়ে বীমার টাকার আবেদন করেছিলেন প্রভাকর, এমনটাই জানান আহমেদনগরের পুলিশ সুপার মনোজ পাতিল।

পরবর্তী তদন্তে জানা যায়, মারা যাওয়া ঐ ব্যক্তিটির নাম নবনাথ যশবন্ত অনপ, ঘটনাক্রমে যাকে খুঁজে পায় প্রভাবকের ঐ দুই সহযোগী। নাটক সাজাতে একজন উদ্ধারকারীর কাছ থেকে একটি গোখরা সাপও যোগাড় করেন হর্ষদ। বীমার টাকা পেতে সফল হলে হর্ষদ ও প্রবীণকে ৩৫ লাখ রুপি দেয়ারও অঙ্গীকার করেন প্রভাবকর।

এরপর স্থান-সময় ঠিক করে নবনাথ নামের ঐ মানসিকভাবে অসুস্থ এক লোকের পায়ে সাপের কামড় খাওয়ায় তারা। লাশ নিয়ে যাওয়া হয় প্রভাবকের বাড়িতে। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে।

এ ঘটনা প্রতিবেশিরা দেখে ফেললে তাদের জানানো হয়, কোভিডে মারা গেছে প্রবীণ। গড়বড়টা এখানেই হয়।

এরপর যখন লাশের ভুয়া কাগজ বানিয়ে সেটিকে ‘নিজের লাশ’ বানান প্রভাবক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আবেদন করেন বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছে। কিন্তু বীমা প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট ভারতে প্রভাকরের গ্রামে এসে দেখেন, না কেউ কোভিডে মরেছে, না কেউ সাপে কাটায়!

দেশে তাকে কেউ তেমন চিনতো না, সেইসঙ্গে নবনাথ নামের লোকটির সাথেও চেহারায় মিল। মূলত এই দুই কারণকেই নাটক সাজানোর সুবিধা হিসেবে নিয়েছিলেন প্রভাকর। কিন্তু সুবিধা আর করতে পারলেন কোথায়! তার আগেই ধরা পড়লেন শ্রীঘরে।

Exit mobile version