Site icon Jamuna Television

করোনা কি জৈব অস্ত্র? সর্বশেষ মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন যা বলছে

করোনা কি জৈব অস্ত্র?

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে স্পষ্ট করতে চালানো গোপন তদন্তের হালনাগাদ প্রতিবেদন দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সেখানে বলা হয়েছে, জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য মানুষের শরীরে করোনা ছড়ানো হয়েছে এ ধরনের ধারণার কোনো প্রমাণ মেলেনি। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, করোনাভাইরাসের উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য হয়তো কখনোই মিলবে না। জীবজন্তুর শরীর থেকে মানুষের মধ্যে করোনা ছড়িয়েছে নাকি চীনের গবেষণাগার থেকেই সেটি ছড়িয়েছে সে প্রশ্নের উত্তরও তাই আপাতত মিলেনি। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।

চীনের উহানে ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর এটি গোটা বিশ্বে ছাড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৫০ লাখের অধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা। বর্তমানে ভ্যাকসিনসহ নানা প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হলেও শুরুতে করোনা আতঙ্কে স্থবির হয়ে পড়ে গোটা পৃথিবী। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কাঁচকলা দেখিয়ে মারা যেতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। আকস্মিক এই ভাইরাসের উৎপত্তির জন্য চীনকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। অনেকে অভিযোগ তোলে, উহানের গবেষণাগার থেকে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হয়েছে করোনা। যদিও এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে চীন। তাদের দাবি, প্রাকৃতিকভাবেই মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে করোনা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের (ওডিএসআই) দফতর থেকে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে হয়তো কখনোই জানা যাবে না। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চালু থাকা ধারণাগুলোর কোনো একটিকে তারা সঠিক বলে বেছে নিতে পারেনি। যারা দাবি করছেন করোনা উহানের গবেষণাগার থেকে জৈব অস্ত্র হিসেবে ছড়ানো হয়েছে তারা কেউই সেখানে গিয়ে তদন্ত করেননি। ফলে এটি প্রমাণিত কোনো সত্য নয়। গোয়েন্দাদের একটি অংশের মনে করে, করোনা প্রাকৃতিকভাবেই জীবজন্তুর মাধ্যমে ছড়িয়েছে।

এর আগে, করোনার উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল দেশটির গোয়েন্দারা। গত আগস্টে সেটি প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ওডিএসআই এই হালনাগাদ প্রতিবেদনটি তৈরি করে। করোনার উৎপত্তি নিয়ে দেশটির গোয়েন্দারাও আদতে একমত হতে পারেননি। একটি অংশের মতে, করোনা জীবজন্তুর মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে ছড়িয়েছে। অন্যদিকে আরেকটি অংশ এ ধারণার সাথে দ্বিমত করেছে। তাদের মতে, উহানের গবেষণাগারে পশুর শরীরে পরীক্ষার সময় অসাবধানতাবশত মানুষের শরীরে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো জোরালো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা।

চীনের সহযোগিতা না পেলে করোনার উৎস নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয় বলেও মনে করে সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা। বিশেষ করে প্রথম দিকে উহানে কোভিড–১৯ আক্রান্ত রোগীদের সংরক্ষিত নমুনা পরীক্ষা না করতে পারলে মানুষের শরীরে করোনার উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ নেই বলে মনে করে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের এমন প্রতিবেদন সম্পর্কে অবশ্য কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি চীন। তবে, বিভিন্ন সময় করোনার উৎপত্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানতে প্রথম দিককার আক্রান্তদের তথ্য ও গবেষণাগার পরিদর্শনের সুযোগ করে দেয়ার পশ্চিমা আহ্বানে কার্যকরভাবে সাড়া দেয়নি দেশটি। এদিকে, এই বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনার উৎস অনুসন্ধানে এটিকেই শেষ সুযোগ উল্লেখ করে চীনের সহযোগিতা চেয়েছে সংস্থাটি।

Exit mobile version