Site icon Jamuna Television

চাঁদে চলবে মোটরসাইকেল!

ছবি: সংগৃহীত।

ল্যান্ডার, রোভারের সময় পেরিয়ে আকাশের ‘একফালি চাঁদ’ এ এবার মোটরসাইকেল চালানোর দিন এসে গেলো। খবর দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস।

অর্থাৎ, চাঁদের বুকে চাকাহীন (ল্যান্ডার) আর ৬ চাকার যান (রোভার) এর দাপট কমার সময় এসে গেছে। দুই চাকার মোটরসাইকেলই দাপিয়ে বেড়াতে পারবে চাঁদে।

চাকার সংখ্যা কমলে সেই চন্দ্রযান মোটরসাইকেলের চেহারাও রোভারের মতো বড় হবে না। ফলে, সেই মোটরসাইকেল নিয়ে চাঁদে যাওয়ার কাজটাও সহজ হয়ে যাবে। মহাকাশযানের ওজন কমবে। তার ফলে, অনেকটাই কমে যাবে জ্বালানি ও শক্তির খরচ। মহাকাশ ভ্রমণে যা সবচেয়ে জরুরি। যেহেতু সেখানে জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে ভরে নেয়ার সুযোগ নেই আপাতত। বেশি জ্বালানি বা বেশি ওজনের ব্যাটারি সঙ্গে নিয়ে গেলে যে মহাকাশযানের ওজনই বেড়ে যায় শেষ পর্যন্ত! অনেক দূরের পথে যা কাম্য নয়। বিপদের আশঙ্কাও বাড়ে তাতে!

চাঁদের এই মোটরসাইকেলের নকশাটি বানিয়েছেন এক রুশ প্রযুক্তিবিদ অ্যান্ড্রু ফ্যাবিশেভ্‌স্কি। পেশায় যিনি মস্কোর অটোমোটিভ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার।

চাঁদের এই মোটরসাইকেল চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে। সেই বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য মোটরসাইকেলের ভেতরেই থাকবে শক্তিশালী ব্যাটারি। যা সৌরশক্তিতে চালানোর কথাই ভাবা হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। ফলে, চাঁদের বুকে মোটরসাইকেল চালাতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনেরও কোনও খরচ পড়বে না। শুধু সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে সোলার ব্যাটারি, কিছু যন্ত্রাংশ।

‘অ্যাপোলো-১৫’ ‘অ্যাপোলো-১৬’ এবং ‘অ্যাপোলো-১৭’ নাসার এই তিনটি চন্দ্রাভিযানে চাঁদের বুকে নামানো হয়েছিল যে তিনটি রোভার, তাদের আকার আকৃতির কথা মাথায় রেখেই এই মোটরসাইকেল বানানোর কথা মাথায় আসে তার, জানিয়েছেন ফ্যাবিশেভ্‌স্কি।

তিনি এও জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে সেই ভাবনা কী ভাবে এগিয়ে গেল। চাঁদের সেই মোটরসাইকেলের ত্রিমাত্রিক বেশ কয়েকটি নকশা এঁকে ফেলেন ফ্যাবিশেভ্‌স্কি। সেগুলি কার কেমন লাগছে জানতে, বুঝতে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন নকশাগুলি। সেগুলি অনেকের সঙ্গে চোখে পড়ে যায় জার্মানির ড্রেসডেনে মোটরসাইকেলের নকশা তৈরির বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘হুকি কো’র এক কর্কমর্তার। তিনিই যোগাযোগ করেন ফ্যাবিশেভ্‌স্কির সঙ্গে। জানান, নকশাগুলি তার খুবই পছন্দ হয়েছে। তার প্রতিষ্ঠান হুকি কো সেগুলোকে শুধুই নকশায় বেঁধে না রেখে বাস্তব রূপ দিতে চায়। তার জন্য কী কী করণীয় প্রযুক্তির দিক থেকে, সে ব্যাপারে ফ্যাবিশেভ্‌স্কির পরামর্শ চান হুকি কো’র কর্তা।

ফ্যাবিশেভ্‌স্কি জানিয়েছেন, চাঁদের মোটরসাইকেল যতটা সম্ভব হাল্কা করার চেষ্টা হচ্ছে। দু’টি চাকা চালানো হবে বিদ্যুৎশক্তিতে। থাকবে ইলেকট্রিক সাসপেনসনও। আর সেই মোটরসাইকেলের রং হবে ধবধবে সাদা। যাতে সূর্যালোকের যতটা সম্ভব প্রতিফলন ঘটানো যায়। তাতে চাঁদের বুকে বহুদূর পথ পাড়ি দিয়েও গরম হয়ে পড়বে না মোটরসাইকেল। তবে মোটরসাইকেলকে কাঙ্খিত গতিতে চালানোর জন্য দরকার হয় কিছুটা মসৃণ রাস্তা। তাই চাঁদেরও যে অংশ কম এবড়োখেবড়ো সেখানেই চালানো হবে এই মোটরসাইকেল।

Exit mobile version