Site icon Jamuna Television

চিকিৎসকের ‘হাড়ভাঙা’ খাটুনিতে ৩ ফুট ৯ ইঞ্চির নারী এখন ৫ ফুট!

অ্যাকনড্রোপ্ল্যাসিয়া নামে বিরল এক রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এই রোগে হাত এবং পায়ের হাড়ের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এই কারণে সেভাবে শরীরটা বাড়েনি তারও। বারো বছর বয়সে তার উচ্চতা ছিল ৩ ফুট নয় ইঞ্চি। সোজা বাংলায় যাকে বলে ‘বামন’।

যার কথা বলা হচ্ছে, তার নাম ক্রিস্টেন ডিঅ্যান্ড্রাদে। বর্তমানে তার বয়স ৩৬। পেশায় যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক। বামন হওয়ায় রোজকার জীবনে সমস্যা লেগেই থাকতো। কমোডেও উঠে বসতে পারতেন না ঠিকঠাক। সুইচ অন-অফ করতে পারতেন না। কানে ঘা হওয়াসহ এটা-ওটা রোগ লেগেই থাকতো।

সাধারণত বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য সাধারণ স্কুলে পড়ার অভিজ্ঞতা একটু তিক্তই হয়। সেদিক থেকে ক্রিস্টেন ছিলেন ভাগ্যবান। তার জন্য ছিল বসার আলাদা ব্যবস্থা। সবাই সাহায্যই করতো।

তবু ক্রিস্টেন ভেবেছিলেন যে করেই হোক, সার্জারি করিয়ে বাড়াবেন নিজের উচ্চতা। কারণ তার স্কুলের মতো সমাজের কটুকথা তো আর ছাড় দিতো না! তাছাড়া কারও সাহায্য ছাড়া কিছু করতে গেলেও পদে পদে সমস্যা হতো।

১৯৯৮ সালের জুন মাসে ১২ বছর বয়সেই ব্রিটেনের ডা. প্যালের অধীনে প্রথম অস্ত্রোপচারটি করান ক্রিস্টেন। ফিমার, হিউমার- পায়ের এই দুই অংশকে মাঝখান থেকে ভেঙে রড ঢুকিয়ে স্ক্রু লাগিয়ে দেয়া হতো। এরপর একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হতো ক্রিস্টেনের হাতের উভয় অংশেই।

টানা চার বছর ধরে চললো এসব অস্ত্রোপচার। কাঁচির নিচে যাওয়া আর সেরে ওঠার মাঝে থাকতে থাকতে ২০০২ সালে ক্রিস্টেন ছুঁয়ে ফেলেন ৫ ফুটের লক্ষ্যমাত্রা। প্রায় ১৭ ইঞ্চি উচ্চতা পেলেন তিনি। দেরি না করে তখনই নিয়ে নেন ড্রাইভিং লাইসেন্সটাও। সিংকের নাগালটাও এরপর ভালোভাবে পাওয়া শুরু করলেন, আর মাকেও রান্নায় সাহায্য করতে থাকলেন।

এভাবেই আত্মবিশ্বাসের সাথে ক্রিস্টেন পার করে ফেলেছেন ৩৬টি বসন্ত। নিজেকে নিয়ে অনেক খুশিও তিনি। যদিও নিজের চেহারা নিয়ে লজ্জা পাবার ‘অপরাধে’ বামনরা তার সমালোচনায় বেশ মুখর। তবে ক্রিস্টেন বলেন, চেহারা নিয়ে লজ্জার জন্য নয়, বরং আরও বেশি স্বাবলম্বী হতেই তিনি গিয়েছিলেন অস্ত্রোপচারের টেবিলে। সূত্র: দ্য মিরর।

Exit mobile version