Site icon Jamuna Television

পরপর ৪ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত ৫ জন গ্রেফতার, নেপথ্যে ৬০ কোটি টাকার লেনদেন‍!

গ্রেফতারকৃত ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতি চক্রের ৫ সদস্য।

ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। একটি দুটি নয়, পরপর ৪টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতির সাথে জড়িত এরা, এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছে পরীক্ষার তত্ত্বাবধায়ক, আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনোলজিস্টসহ ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা। পুলিশ জানায়, প্রশ্নফাঁসের বিনিময়ে এরইমধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় ইতোমধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

গত শনিবার (৬ নভেম্বর) ৫টি ব্যাংকের ১৫১১টি ‘অফিসার (ক্যাশ)’ শূন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবং এ পরীক্ষাটি সম্পাদন করে আহসানাউল্লাহ ইউনির্ভাসিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

কিন্তু পরীক্ষা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ১০০টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর সম্বলিত একটি কাগজ ফেসবুকে আপলোড হয়ে যায়। এতো কম সময়ে প্রশ্নপত্রের সমাধান সম্ভব নয়, জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ করেন চাকরি প্রত্যাশীরা। এরপর অভিযান চালিয়ে জালিয়াতি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি। উদ্ধার হয় নগদ অর্থ, ল্যাপটপ, মোবাইলসহ প্রশ্নপত্র জালিয়াতি করার বিভিন্ন সরঞ্জাম।

মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছে থেকে প্রাথমিকভাবে ৬০ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছেন। যার মধ্যে ৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি, তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে বাড্ডা থানায়। এবং তাদের কাছ থেকে আলামত হিসেবে ৫টি মোবাইল ফোন, ৪টি করে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র, উত্তরপত্রের ছবি, একটি প্রবেশপত্র, ও নগদ ৬ লক্ষ টাকা।

প্রায় ২শ জনের এই চক্রটি এর আগেও ৩টি ব্যাংক-পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছে। এজন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নৈব্যত্তিক ও লিখিত পরীক্ষার আগে ৪০ শতাংশ টাকা নিতো তাকা। বাকী টাকা আদায় করতো চাকরী নিশ্চিতের পর। এরই মধ্যে চক্রের মূল হোতা মো. মুক্তারুজ্জাসান রয়েলকে বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আহসানুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান। আছেন ৩ ব্যাংক কর্মকর্তাও।


ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, চাকরীর লোভ দেখিয়ে প্রায় ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকার লেনদেন করতো এ চক্র। বিভিন্ন বুথে আমরা ২০০ জনের একটি তালিকা পেয়েছি। ব্যাংক কর্মকর্তারা মিলে একটি সিন্ডিকেট করেছে। যেহেতু মামলা হয়েছে, যারা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে যে এর আগে আরও ৪ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতি করেছে।

এরআগে ২০১৭ সালের ১৯ মে অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের বাছাইপর্বের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। পরে ওই পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

Exit mobile version