Site icon Jamuna Television

যে কারণে খালাস দেয়া হলো রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার আসামিদের

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার সবাইকে খালাস দেয়া হয়েছে। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা হয়।

তবে খালাসের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর আইনজীবী।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত ওই ৫ আসামিকে খালাস দেয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আদালত মনে করেন, ধর্ষণের ঘটনার ৩৮ দিন পর কেন মামলা করা হলো, এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তাছাড়া ভুক্তভোগীর মেডিকেল প্রতিবেদন ও পোশাকের নমুনা পরীক্ষায়ও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন আদালত।

রায়ে বলা হয়, মেডিকেল প্রতিবেদন অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, মূলত তারা আগে থেকেই সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। এমনকি এসব বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

রায়ে বলা হয়, আসামি শাফাতের সাবেক স্ত্রী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার সাথে তার শত্রুতা থাকাটা স্বাভাবিক। পিয়াসা থানায় উপস্থিত হয়ে এই মামলাটি করান বলেও রায়ে বলা হয়। মামলার আসামি নাঈম আশরাফ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে তার দেওয়া জবানবন্দি অসত্য। পরে আদালতে লিখিত দরখাস্ত দিয়ে আসামি নাঈম আশরাফ এমনটি বলেছিলেন বলেও জানানো হয়। অপর আসামিরাও নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে কোনো বক্তব্য দেননি।

ওই দুই ভুক্তভোগী ঘটনার দিন রেইনট্রি হোটেলে যান, তদন্ত কর্মকর্তা এমন দাবি প্রমাণ করতে পারেননি। এমনকি হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায়ও ওই দুই ভুক্তভোগীর নাম নেই। এরপর থেকে সঠিক তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়, এমন কথাও বলা হয় রায়ে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ ওই ঘটনার পর প্রথম দিকে পুলিশ মামলা না নিলেও পরে এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হলে ৬ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী থানায় ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় ৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৮ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা এমি ৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ১৩ জুলাই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত। এর পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে তা শেষ হয় ২২ আগস্ট।

Exit mobile version