Site icon Jamuna Television

প্রথমবারের মতো হাতি মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের

শেরপুরের সীমান্ত এলাকার গারো পাহাড়ে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। গত ১০ বছরে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বা বিভিন্ন উপায়ে মানুষের হাতে মারা পড়েছে প্রায় ২৫টি হাতি। অন্যদিকে হাতির হামলায় এই সীমান্তে প্রাণ গেছে প্রায় ৫০ জন মানুষের। গত ১০ দিনে শেরপুর সীমান্তে ২টি হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। ।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী- নালিতাবাড়ীর ভারত সীমান্তের ১৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৩টি দলে প্রায় ১শ ২৫টি বন্যহাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিপন্ন এই প্রানীগুলো প্রায়ই মারা পড়ছে বনের জায়গায় অবৈধভাবে বাস করা মানুষের হাতে। আর বনবিভাগ দায়সারা ভাবে এ সব হাতির মৃত্যুকে অসুস্থ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যদিও এই প্রথম হাতি হত্যায় ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ১০ দিনের ব্যবধানে সীমান্ত এলাকায় ফসলের ক্ষেতে মরে পড়ে থাকতে দেখা যায় দুটি বন্য হাতিকে, জেলার বালিজুড়ি ও নালিতাবাড়ীর পানিহাতা সীমান্তে উদ্ধার করা হয় হাতি দু’টির মরদেহ ।

প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় গহীন বন থেকে ঢুকে পড়ে বন্য হাতির দল। হাতির খাদ্য চাহিদা মেটাতে বনের পাশে লাগানো কাচাপাঁকা ধান ও বিভিন্ন শাক-সবজি-ফল ও গাছপালা খেয়ে সাবাড় করে বন্য হাতির পাল।

বন বিভাগের জায়গায় অবৈধভাবে লাগানো এ সব ফসল টার্গেট করে হাতির পাল হামলা চালায়। মানবসৃস্ট কারণে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস করায় বিপন্ন এই প্রাণী অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।

সচেতন মহল জানায়, মূলত হাতির আবাসস্থলে পাহাড়ী এলাকায় জনবসতি গড়ে তোলায় এমনটি হচ্ছে। বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, শেরপুর সীমান্তে প্রায় ১১ হাজার একর বনের জমি অবৈধ দখলদারের হাতে। আর এসব জমিতে বসবাসসহ ফসল ফলানোর কারণে হাতিসহ নানা জীবজন্তুর আবাসস্থল হুমকির মুখে পড়েছে। আর এতে বাড়ছে হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব।

এ সময় হাতি তাড়াতে জেনারেটরে বৈদুতিক সংযোগে জিআই তারে শক সিস্টেমে আহত সহ মারা পড়ছে অনেক হাতি। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতি বেপোরোয়া হয়ে হামলা করছে প্রতিনিয়ত।

অন্যদিকে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে মামলাসহ নানা কঠোর পদক্ষেপসহ অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান বালিজুড়ী রেঞ্জ শ্রীবরদী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম।

এ দিকে শেরপুর জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করে বলেন, সীমান্তে হাতি রক্ষায় রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধসহ যারা হত্যায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

গত দশ বছরে মানুষসৃষ্ট পাহাড়ের গর্তে পড়ে এবং বৈদুতিক শকের কারণে মারা গেছে ২৫টি হাতি। তাই পাহাড়ে বন্য হাতির প্রাণ রক্ষায় সোলার ফেনসিং সহ নানা উদ্যোগ গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।

Exit mobile version