Site icon Jamuna Television

মাহফিলে আবু ত্বহাকে বক্তব্য দিতে না দেয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় দুই মামলা

ভাঙচুরের পর করিমপুর পুলিশ ফাঁড়ি।

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের কানাইপুরে ইসলামি বক্তা আবু ত্বহাকে ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দিতে না দেয়াকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী করিমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে বিক্ষুব্ধদের হামলার ঘটনায় কোতয়ালী থানায় দুইটি মামলা করা হয়েছে।

ওই পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহ বাদী হয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা, তিন পুলিশ সদস্যকে আহত করা, পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

করিমপুর পুলিশ ফাঁড়ি যে ভাড়া ভবনে অবস্থিত, সেই ভবনের মালিক নান্নু শেখ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। হামলার কারণে তার ব্যাক্তিগত একটি মাইক্রোবাস ও ভাড়ায় চালিত একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। দুইটি মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত আড়াইশ থেকে তিনশজনকে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত কানাইপুর ইউনিয়নের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে নির্মাণাধীন জুট মিল মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ শর্টগানের ২২টি ফাঁকা ফায়ারের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, ওই মাঠে মারকাযুত তাকওয়া ইসলামি মাদ্রাসা ও সরদার বাড়ি জামে মসজিদের উদ্যোগে বার্ষিক এ ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল তরুণ ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওয়াজ মহফিল মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, প্রশাসনের আপত্তির কারণে আবু ত্বহা মুহাম্মদ বক্তব্য দেবেন না। এরপর ওয়াজ মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই সময় ওয়াজ মাহফিলের মাঠে প্রায় ১০ হাজার শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন। এ ঘোষণায় শ্রোতাদের কিছু অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিক্ষুব্ধ জনতা পাশের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন এবং মহাসড়কে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।

ওই সময় বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত করিমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে। বিক্ষুব্ধরা ইট ছোঁড়ে এবং ফাঁড়িতে থাকা পুলিশের দুটি গাড়ি ও একটি অ্যাম্বুলেন্সের কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে।

পরে ফরিদপুর থেকে দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে রাত সোয়া ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

ফরিদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কর মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, আয়োজক কমিটিকে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে ওই বক্তাকে না আনার বিষয় জানিয়ে দেয়া হয়েছিল কিন্তু আয়োজক কমিটি এই তথ্য গোপন করে আবু ত্বহার আসার ব্যাপারে প্রচার চালিয়ে যায়।

/এসএইচ

Exit mobile version