‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ’ শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাকাশ বিষয়ক টেলিস্কোপ। দক্ষিণ আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে ইউরোপিয়ান আরিয়ান রকেটে চেপে মহাকাশে যাত্রা করেছে এ টেলিস্কোপ। মহাবিশ্বে আলো বিকিরণকারী যেকোনো নিকটবর্তী নক্ষত্র ও ছায়াপথের ছবি ধারণ করতে পারবে এই টেলিস্কোপ।
এই টেলিস্কোপ তৈরি করতে খরচ হয়েছে এক হাজার কোটি ডলারের বেশি। ৩০ বছর ধরে এর নকশা করা হয়েছে; যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এমন তথ্য। এই টেলিস্কোপ একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টার মধ্যে অন্যতম। দূরে অবস্থিত গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডল, আবহাওয়া সম্পর্কেও অনুসন্ধানের সক্ষমতা আছে এ টেলিস্কোপের।
টেলিস্কাপটির নামকরণ করা হয়েছে চাঁদে অবতরণকারী অ্যাপোলো নভোযানের একজন স্থপতির নামে। হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরী এ যন্ত্র তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও কানাডার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রকৌশলীরা। এটি আগের যেকোনো টেলিস্কোপের চেয়ে শতগুন শক্তিশালী।
বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই অপেক্ষা করছিলেন এ টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণের। আগেরদিনই মহাকাশের উদ্দেশে উড়াল দেয়ার কথা থাকলেও বাজে আবহাওয়ার কারণে উড়াল দেয়নি। বড়দিনের দিনই যাত্রা করে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
টেলিস্কোপটিতে রয়েছে সাড়ে ছয় মিটার প্রশস্ত সোনালী আয়না। এটি হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে তিনগুন প্রশস্ত। এছাড়াও বর্ধিত অপটিক্স চারটি অতি-সংবেদনশীল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মহাকাশের গভীরে দেখতে সক্ষম করে তুলবে।
টেলিস্কোপটির মূল লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে, বিগ ব্যাংয়ের পরপরই (প্রায় সাড়ে ১৩ বিলিয়ন বছর আগের) সৃষ্ট আদি নক্ষত্রের তথ্য অনুসন্ধান করা। এ বস্তুগুলোর মধ্যে পারমাণবিক বিক্রিয়া থেকেই জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রথম ভারী পরমাণুগুলো সৃষ্টি হয়। যেমন কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস ও সালফার সৃষ্টির জন্য এগুলো দায়ী। এছাড়া এটি দিয়ে দূরবর্তী নক্ষত্রের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। কোনো গ্রহ বাসযোগ্য কিনা তাও বুঝতে সাহায্য করবে।
এমএন/

