Site icon Jamuna Television

‘ভোট দিয়ে কী আইবো? ছেরী বয়স্কভাতা পাইলেও আমি পাই না’

খালিয়াজুরীতে প্রতিবেশীর কোলে উঠে ভোট দিতে এসেছেন শতবর্ষী নারী মাসুমা বেগম।

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:

‘আমার জামাই মারা গেছে তিরিশ বছর আগে। আমার নিঃসন্তান মাইয়া মাইষের বাড়িতে কাজ কইরা আমারে খাওয়ায়। সময়মতো ওষুধ-পত্তর হাইনা। কত চেয়ারম্যান-মেম্বার আইল-গেল কেউ কোনো সাহায্য করল না। আমি ছেরির (মেয়ের) ভাঙ্গা ঘরে থাকি। আমার ছেড়া (ছেলে) নাই, মাইয়াগো কাছে থাকি। শুনেছি শেখের বেটি গরিব-দুঃখী মানুষরে ঘর দেয়। আমার কহালে (কপালে) তাও জুটলো না।’

রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার শিন্নীপাড়া কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে এসব কথা বলছিলেন ১০৫ বছর বয়সী মাসুমা বেগম। তিনি নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট (দুলোপুতা) গ্রামের মৃত রমজান আলীর স্ত্রী।

জানা গেছে, মাসুমা বেগম পাচহাট দুলোপুতা গ্রামের রমজান আলীর সাথে বিয়ে হয়ে প্রায় আট দশক পার করেছেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে কোনো ছেলে সন্তান নেই। তিনি তিন কন্যার জননী। তার স্বামীর ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জায়গা-জমি নেই। মেয়ে বিধবা ভাতা পেলেও মাসুমা ত্রিশ বছরেও পাননি বিধবা ভাতা।

মাসুমা বেগম ভাঙা একটি ঘরে তার বিধবা মেয়ের সাথে থাকেন। কখনো গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (ইজিপিপি) শ্রমিকের কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি। এভাবেই খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন মাসুমা বেগম। বয়সের ভারে তিনি এখন চোখেও খুব একটা দেখেন না। কানেও শুনতে পান না। শরীরও নিস্তেজ হয়ে গেছে।

মাসুমার দ্বিতীয় মেয়ে কল্পনা বেগম বলেন, আমার মায়ের শত বছর পার হলেও দরিদ্র মানুষ হিসেবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি। এই বছর একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে। আমি বিধবা ভাতা পেলেও আমার মা কখনো বিধবা ভাতা সুবিধা ভোগ করতে পারেনি। মা এখন বয়সের ভারে চোখে দেখেনা, কানেও শোনেনা।

জেডআই/

Exit mobile version