সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জে বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় একদিন পর ৩১ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে চারটি। তবে সেই অস্ত্রধারীদের কেউই এখনো আটক না হওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন শহরবাসীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার কলেজ রোডে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারী যুবকদের কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। শহরের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনার একদিন পর শুক্রবার পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। চারটি মামলায় আটশ’ জনের বিরুদ্ধে মামলা দাখিল হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো মামলা হয়নি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ: হয়নি মামলা, অস্ত্রধারীদেরও আটক করতে পারেনি পুলিশ
মামলার বাদী উজ্জল হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সমাবেশের আহ্বান করে জেলা বিএনপি। সমাবেশে আসার পথে কলেজ রোড এলাকায় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় কয়েকজন যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায়। তাদের দুই দলের সংঘর্ষের কারণে আমার এলাকাবাসী ফজলুল হক রোডস্থ অনেক সাধারণ মানুষ ও পথচারী ইট পাটকেলের ঢিলে আহত হয়েছে। তাই এই সকল হামলাকারী ও অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য আমি এলাকাবাসী হিসেবে মামলা করেছি।
সিরাজগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক মোল্লা বলেন, সেদিন বিএনপি সমাবেশের নামে শহরে নৈরাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিল। তারা পূর্ব থেকে পরিকল্পনা করে অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ছিল। চৌরাস্তা জামে মসজিদের পাশে ইট পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র জমা রেখেছিল। তাদের এই পরিকল্পনা আমাদের জানা ছিলনা। বিএনপি সমাবেশে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
আমরা চাই পুলিশ দ্রুত এই সকল অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করবে। আমরা এখনো মামলা করিনি কারণ আমাদের অনেক ছেলে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে। ওদের অবস্থা একটু ভালো হলে নেতাদের সাথে পরামর্শ করে মামলা করা হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, সেদিন আমাদের পূর্ব ঘোষিত জনসভায় যখন নেতা কর্মীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে আসতে শুরু করে তখন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পথের মোড়ে মোড়ে বাধা প্রদান করে গাড়ি ভাংচুর করে। হামলা চালিয়ে ৫০-৬০জনকে আহত করে। ঐদিন প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করতে দেখেছেন আপনারা সবাই। একটা কথা স্পষ্ট যে সেদিন আওয়ামী লীগ ব্রিজের পশ্চিমে আর আমরা ব্রিজের পূর্বে অবস্থান নিয়েছিলাম। পুলিশ ভিডিও সংগ্রহ করে কেন এই অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাই আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেফতার করবে। আমরা এখনো মামলা করিনি তবে দু একদিনের মধ্যে নেতা কর্মীদের সাথে পরামর্শ করে মামলা করবো।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়েছে। হামলাকারীরা আমাদের গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করে আমাদের আহত করেছে। তবে সেদিনের সেই অস্ত্রধারীকে আমরাও খুঁজছি। আশাকরি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারব।
/এনএএস
Leave a reply