Site icon Jamuna Television

খাবারের জন্য সন্তানদের বিক্রি করে দিচ্ছেন আফগানরা

ছবি: সংগৃহীত

নতুন বছরে বিভিন্ন দেশের শিশুরা যখন বই হাতে স্কুলে যাচ্ছে তখন বিক্রি হচ্ছে আফগানিস্তানের শিশুরা। অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী কন্যা শিশুকে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিনিময়ে পাত্র পক্ষ থেকে মিলছে কিছু নগদ অর্থ। তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগ পর্যন্ত পরিবারের সাথেই থাকবে বিক্রি হওয়া শিশুরা।

আজিজ গুল নামের এক কন্যা শিশুর মা বলেন, বাড়িতে খাওয়ার মতো কিছুই নেই। বলতে গেলে কয়েকদিন ধরেই না খেয়ে আছি। তাই বাধ্য হয়ে কন্যাকে বিক্রি করে দিচ্ছি। একজনের থেকে ১ হাজার ডলার নিয়েছি। এই টাকা ফেরত না দিতে পারলে তারা আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। জানি না এই টাকা শেষ হলে কি করবো। হয়তো মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।

শিশু কন্যা প্রাপ্তবয়স্ক হলে পাত্রের সাথে বিয়ে হবে। এমন শর্তে ছেলের পরিবার থেকে অর্থ নেন মেয়ের পরিবার। সেই সময় পর্যন্ত বাবা-মায়ের কাছেই থাকবে কন্যা শিশু।

হামিদ আবদুল্লাহ নামের আরেক কন্যা শিশুর বাবা বলেন, খাবার এবং ওষুধ কেনার জন্য আমার এই মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছি। তার স্বামী অন্য শহরে থাকে। আমার আরেকটি কন্যা রয়েছে তাকেও বিক্রি করতে চাই। কারণ পরিবারের অন্যদের বাঁচাতে আমার কাছে আর কোনো পথ খোলা নেই।

শুধু মেয়ে শিশুই নয়, অনেক পরিবার খাবারের জন্য অর্থ জোগাতে না পেরে ছেলে শিশুও বিক্রি করে দিচ্ছেন। যাদের কোনো সন্তান নেই বা ছেলে সন্তান নেই তারাই কিনে নিচ্ছেন।

দেশটিতে কর্মরত এনজিও কর্মীরা বলছেন, অর্থনৈতিক মন্দা ও খাদ্য সংকট আরও বাড়তে পারে।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের আফগানিস্তান বিষয়ক পরিচালক অসান্তা চার্লেস জানান, অর্থনৈতিক ভাবে চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে আফগানিস্তান। খাবারের জন্য অন্য পরিবারের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে বাবা-মা। এমন খবর সত্যিই কষ্টদায়ক। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে আফগানিস্তানে অনুদান পাঠানোর এটাই সঠিক সময়।

মূলত, গেলো আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয়ার পর থেকেই বাড়ছে অর্থনৈতিক সংকট। এছাড়া, বিদেশি সহায়তা বন্ধ এবং সম্পদ জব্দ থাকায় সেই সংকট এখন চরমে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানে অপুষ্টিতে ভুগছে ৫ বছরের নীচে কমপক্ষে ৩২ লাখ শিশু।

Exit mobile version