Site icon Jamuna Television

১ বছর পর স্বজনদের খুঁজে পেল চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া শিশু শরীফ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

এক বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া শিশু শরীফের স্বজনদের খোঁজ পাওয়া গেছে। সে মা চান বানু ও নানি আমিনা বেগমের সঙ্গে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে বসবাস করতো।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা, সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হিমেল খান প্রমুখ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের বৈকন্ঠপুর এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যায় শরীফ। আশুগঞ্জ থানা পুলিশ রেললাইনের পাশ থেকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ২৫ দিন পর শিশুটির জ্ঞান ফিরে। কিন্তু সে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে শিশুটির চিকিৎসা চলছিল। সেখানে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী উজ্জ্বল খান শিশুটিকে লালন-পালন করছিলেন। এক বছরেও শিশুটির পরিবারের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।

অবশেষে সোমবার সকালে শিশুটির মা ও নানি হাসপাতালে এসে তাকে শনাক্ত করেন। পরিচয় হিসেবে জন্ম নিবন্ধন ও মায়ের সঙ্গে থাকা একটি ছবি দেখান তারা। যাচাই-বাছাই করে দুপুরে শিশুটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

শিশুটির নানি আমিনা বেগম বলেন, চান বানুর একমাত্র সন্তান শরীফ। আমার মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। সে যখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন তার বাবা তাদের ফেলে চলে যায়। আমি তাদের নিয়ে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে বসবাস করে ভিক্ষা করে চলছি। শরীফ নিখোঁজ হওয়ার পর অনেক জায়গায় খোঁজ করেছি। দীর্ঘদিন পর হাসপাতালে এসে তার সন্ধান পেলাম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতো হাসপাতালের এক স্টাফ লালন-পালন করছিলেন। তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শিশুটিকে লালন-পালন করা হাসপাতালের পরিছন্নতাকর্মী উজ্জ্বল খান আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, শিশুটিকে নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি স্নেহ করেছি। তার প্রতি আমার ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছি। এখন তার পরিবার এসেছে নিতে। মায়ের কাছে তো তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিতেই হবে। দোয়া করি সে যেন সবসময় ভালো থাকে।

জেডআই/

Exit mobile version