ছবি: সংগৃহীত।
বিরল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী হয়েছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। মহাসাগরের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটেছে আগ্নেয়গিরির। যার ভয়াবহতার প্রভাব বেশি পড়েছে ছোট দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গায়।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সাগরের তলদেশে রূদ্রমূর্তি ধারণ করে আগ্নেয়গিরি। ৮ মিনিটের অগ্ন্যুৎপাত নাড়িয়ে দেয় গোটা অঞ্চল, এমনকি দূরতম প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকেও। সুনামি সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও নিউজিল্যান্ড। সাগরতলের এই বিপর্যয় হতবাক করেছে ভূতাত্ত্বিকদের। তাদের অভিমত এটি ‘অনন্য-অসাধারণ’ ঘটনা।
বিস্ফোরণের চিত্রটি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইটে। সেখানে বিস্ফোরণের ধরণ দেখে মনে হয়েছে, যেনো মহাশক্তিধর পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ। সাগরতলের আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হওয়ার তীব্রতা এতোই জোরালো ছিলো যে, আকাশের ২০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত ছড়ায় ছাই আর ধোঁয়া। টোঙ্গার সমুদ্রতলের প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে ৮০০ কিলোমিটার দূরের ফিজিতেও।
শনিবারের এ ঘটনার পর মুহূর্তেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই’র বিপর্যয়ের ভিডিও। ৮ মিনিটের বিপর্যয় নাড়িয়ে দেয়, গোটা অঞ্চল। জারি করা হয় একের পর এক সুনামি সতর্কতা। যাকে, নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবেই আখ্যা দিয়েছেন ভূতাত্ত্বিকরা।
এ নিয়ে টোঙ্গার মুখ্য ভূতত্ত্ববিদ প্রফেসর ডেভিড তাপিন বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরের সুনামি নিয়ে ৪০ বছর ধরে গবেষণা করছি। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এটি অনন্য-অসাধারণ ঘটনা। দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে সুনামি প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু, সাগরতলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এই প্রথম ঘটলো, যা সবার জন্যেই সারপ্রাইজ।
অবশ্য, সমুদ্র তলদেশে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা নতুন নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন- শতবছর মধ্যে একবার হয়তো দেখা মেলে এ দৃশ্যের।
প্রফেসর ডেভিড তাপিন আরও বলেন, সাগরতলে আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়ে ওঠার ঘটনা এই প্রথম নয়। ১৮৮৩ সালে ইন্দোনেশিয়া সাক্ষী হয়েছিলো এমন অগ্ন্যুৎপাতের। সেসময় প্রাণ হারান অঞ্চলটির ৩৬ হাজার মানুষ। ২০১৪ সাল থেকে হুঙ্গা হাপাই সক্রিয়। গত বছরের শেষ নাগাদ বুদবুদ ওঠা শুরু করে সেখানে। যার রূদ্রমূতি এবার দেখলো বিশ্ব।
দূরতম প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের সরকার বলছে, ক্ষয়ক্ষতি এতোটা তীব্র না হলেও প্রথম থেকেই তারা ছিলো সতর্ক অবস্থানে।
এছাড়া অগ্ন্যুৎপাতের ধাক্কায় সর্বোচ্চ ১০ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে জাপান। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এরইমধ্যে ৪ ফুটের কাছাকাছি হচ্ছে জলোচ্ছ্বাস। যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ে প্লাবিত হতে পারে সান ফ্রান্সিসকো, বার্কলে সান্তা ক্রুজের মতো উপকূলীয় এলাকা।
এসজেড/
Leave a reply