Site icon Jamuna Television

মিউনিখ ট্র্যাজেডি: আজ ‘বাসবি বেবস’দের স্মরণের দিন

ছবি: সংগৃহীত

আজ ৬ ফেব্রুয়ারি, ঐতিহাসিক মিউনিখ ট্র্যাজেডির দিন। বেলগ্রেড থেকে নিজ শহরে ফেরার পথে ৬৪ বছর আগের এ দিনে মিউনিখে বিধ্বস্ত হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে বহনকারী বিমান। মারা যায় ‘বাসবি বেবস’খ্যাত আট ফুটবলার। ঐতিহাসিক সেই দিনটি স্মরণে এবার বড় আয়োজন থাকছে ‘থিয়েটার অব ড্রিম’ ওল্ড ট্রাফোর্ডে।

ইউরোপিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রেডস্টার বেলগ্রেডের সাথে ফিরতি লেগের খেলায় ৩-৩ ব্যবধানে ড্র করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪-এ এগিয়ে থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ঘরে ফেরার আনন্দে ছিল কিংবদন্তি কোচ স্যার ম্যাট বাসবির শিষ্যরা। অবিভক্ত যুগোস্লাভিয়ার বেলগ্রেড থেকে ম্যানচেস্টারে ফিরছিলেন ফুটবলার, সমর্থক ও সাংবাদিকদের বহনকারী বিমানটি।

স্যার ম্যাট বাসবির শিষ্যদের বলা হতো ‘বাসবি বেবস’। ছবি: সংগৃহীত

এলিজাবেথান এয়ারস্পিড এয়ারক্রাফটের বেলগ্রেড থেকে ম্যানচেস্টার পর্যন্ত সরাসরি উড্ডয়নের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি ছিল না। তাই তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির মিউনিখের রেম বিমানবন্দরে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য অবতরণ করে বিমানটি। জ্বালানি সংগ্রহ শেষে বিমান উড্ডয়নের জন্য দু’বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পাইলট।

ততক্ষণে মিউনিখের আকাশে শুরু হয় তুষারপাত। শিডিউল ঠিক রাখতে বিমানের ক্যাপ্টেন জেমস থেইন পরিকল্পনা বাতিল করে যাত্রীদের বিমানে ডেকে পাঠান। তবে দু’বার চেষ্টা করেও বিমান উড়াতে ব্যর্থ হন পাইলট। ঘড়িতে যখন বিকাল ৩:০৪ টা, তখন তৃতীয় প্রচেষ্টায় দ্বিগুণ গতি সঞ্চারের পর রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে বিমানটি। প্রথমে একটি বাড়ি ও পরে গাছের সাথে আঘাতের পর মিউনিখের শুভ্র তুষার ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় এই মিউনিখ ট্র্যাজেডি। ছবি: সংগৃহীত

এক অতর্কিত সিদ্ধান্তে সেইদিন জিওফ বেন্ট, ডানকান এডওয়ার্ডস, ডেভিড পেগ, টমি টেইলর’সহ বিমানের ৪৪ জন যাত্রীর মধ্যে ২৩ জন যাত্রী না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়ে ট্র্যাজিক হিরো হয়ে জায়গা করে নেন ইতিহাসের পাতায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাতজন খেলোয়াড় ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ডানকান এডওয়ার্ডস ২১ ফেব্রুয়ারি মারা যান। অন্য দুজন খেলোয়াড়কে দুর্ঘটনার জেরে অবসর নিতে হয়। ম্যাট বাসবি গুরুতর আহত হন এবং তাকে বেশ কিছুকাল হাসপাতালে থাকতে হয়। এ সময় জোর অনুমান চলছিল যে, ক্লাবটিকে বন্ধ করে দেয়া হবে। কিন্তু ইউনাইটেডের কোচ জেমস মারফি ম্যানেজারের দায়িত্ব নেন এবং জীর্ণ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোনোমতে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে লিগ শেষ করে।

ছবি: সংগৃহীত

পরের মৌসুমে স্যার বাসবি দলের ম্যানেজার হিসেবে প্রত্যাবর্তন করেন এবং শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রজন্মের বাসবি বেবস গঠনে সমর্থ হন। এ সময় দলে আসেন জর্জ বেস্ট ও ডেনিস ল’র মতো খেলোয়াড়েরা, যারা দুর্ঘটনার এক দশক পর ১৯৬৮ সালে বেনফিকাকে হারিয়ে প্রথম ইউরোপিয়ান কাপ শিরোপা জয়লাভ করেন। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ববি চার্লটন ও বিল ফোকসও ছিলেন সেই দলের সদস্য।

Exit mobile version