Site icon Jamuna Television

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন ও ভ্রুণহত্যার অভিযোগে পুলিশ সদস্য কারাগারে

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মো. তাজুল ইসলাম রুবেল।

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের দুই মাসের সন্তানকে নষ্ট করার অভিযোগে পুলিশ সদস্য মো. তাজুল ইসলাম রুবেলকে (২৬) জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় রুবেল দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করে। তবে বিচারক মো. হাফিজুর রহমান জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। রুবেল পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত ছিল।

অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ছুটিতে বাড়ি এসে স্ত্রী সুমি আকতারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে রুবেল। স্ত্রী যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য উত্তেজিত হয়ে তার গর্ভবতী স্ত্রীর পেটে লাথি মারে। এতে স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে গর্ভে থাকা সন্তানকে রক্ষা করা যায়নি।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সুমি আকতারের মা হেলেনা বেগম বরগুনা থানায় ২০২১ সালের ১০ আগস্ট মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। পরে ১ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর ওই ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলাম রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে রুবেলের স্ত্রী সুমি আক্তার পিরোজপুর পুলিশ সুপার বরাবর সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রুবেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

আরও পড়ুন: ৫ ভাই এর ঘাতক সেই পিকআপটি জব্দ করেছে পুলিশ

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী সুমি আকতারের মা হেলেনা বেগম বলেন, আমি মামলা করার পর রুবেল আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে আসছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বরিশাল ডিআইজি অফিসেও নিয়ে যায়। সেখানে আমরা রুবেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার পরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এসময় রুবেলের বিচারের দাবি করেন তিনি।

এদিকে, মঙ্গলবার রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর কোর্ট বারান্দায় পুলিশের সামনেই উচ্চ স্বরে বাদীর আইনজীবীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে রুবেল। সেই সাথে সুমিকে তালাক দেয়াসহ নানা হুমকি দিতে থাকে সেখানেই। পরে কোর্ট পুলিশ রুবেলকে শান্ত করে।

এনিয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান মুঠো ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, তাজুল ইসলাম রুবেল জেল হাজতে যাওয়ার অফিসিয়াল কোনো তথ্য হাতে পৌঁছালে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসজেড/

Exit mobile version