মাহবুবুর রহমান হিমু:
শিরোনাম দেখে হয়তো একটু খটকা লাগতেই পারে। একজন মানুষ একইসোথে ভাগ্যবান আবার হতভাগা কীভাবে হতে পারেন? অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমনই হোক, ব্যক্তিটি যখন জাতীয় দলের ক্রিকেটার লিটন দাস, তখন এটাই যেন তাকে বিশ্লেষণ করার জন্যে সবচেয়ে মানানসই শব্দ।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ দলে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং কৌশলের কথা বলতে গেলে লিটন দাসের নামটা থাকবে ওপরের দিকেই। তবে প্রসঙ্গ যখন ধারাবাহিকতার সাথে রান করা, সেখানে লিটন যেন পিছিয়ে যাচ্ছেন বার বার।
ধারাবাহিকতার কারণে তাকে দলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও যখনই দল থেকে বাদ পড়তেন লিটন তখন যেন ঘরোয়া ক্রিকেট বা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রান করে আবারও ফিরে আসতেন জাতীয় দলে। অনেকেই চাইতেন যেন জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে যায় লিটনের জন্য, তবে ধারাবাহিকভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে প্রতিনিয়তই কড়া নাড়তেন বিসিবির দরজায়। বারবার যিনি কড়া নাড়েন, তাকে কি চাইলেই উপেক্ষা করা যায়?
উপেক্ষা করা যায়নি লিটনকেও। নিজের যোগ্যতা দিয়েই ফিরে এসেছেন বারবার, তবে ভাগ্যের শিকলটা নিয়মিত ছিঁড়তে পারেননি তিনি। এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি যেন ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম অংশের অনেক বড় এক হাইলাইটস।
মুদ্রার যেমন দুই দিক রয়েছে, লিটনের ক্যারিয়ারও যেন এখন দুই অংশে বিভক্ত হয়ে গেছে। সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে নামলে এখন তিনি হন বেশ সমালোচনার শিকার। যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফর্মেন্স ও পাকিস্তান সিরিজে দল থেকে বাদ পড়া। আবার টেস্ট ক্রিকেটে যেন নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন কেন তাকে নিয়ে মানুষের এতটা আগ্রহ, কেন অধিনায়ক তার প্রতি ভরসা রাখেন, কেন বোর্ডও তাকে বারবার সুযোগ দেন। যার বড় প্রমাণ সবশেষ টেস্ট সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২য় টেস্টে সেঞ্চুরি ও ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের ম্যাচে খেলেছেন ৮৬ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস।
সাদা বলে যতটা আক্ষেপ লিটন দাস, সাদা পোশাকে যেন ঠিক ততটাই ভরসার জায়গা তিনি। এরকম একজন মানুষকে ‘ভাগ্যবান দুর্ভাগা’ হিসেবে বিশ্লেষণ করলে নিশ্চয়ই অন্যায় হবে না।
বর্তমানে চলছে বিপিএলের ৮ম আসর। সেখানে ব্যাট হাতে খুব বেশি জ্বলে না উঠলেও হয়তো এই পারফর্মেন্সের কারণে আবারও সুযোগ পেতে পারেন জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। যদি সুযোগ পান তবে নিশ্চিতভাবেই প্রত্যাশা থাকবে যেন সাদা পোশাকের মতো সাদা বলের ক্রিকেটেও জ্বলে উঠতে পারেন লিটন কুমার দাস।
/এডব্লিউ

