Site icon Jamuna Television

বাবা-মা মারা যাওয়ার ৪ বছর পর সন্তানের জন্ম

(নাতির সাথে দাদা-দাদি ও নানা-নানি)

খবরটি শুনতে অদ্ভুত লাগছে নিশ্চয়ই। মা দুনিয়াতে না থাকলে আবার বাচ্চার জন্ম হয় কী করে! হয়। প্রযুক্তি তা-ই প্রমাণ করেছে। ২০১৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় একসাথে মারা গিয়েছিলেন চীনা এক দম্পতি। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তারা নিজেদের সন্তানের ভ্রুণ সংরক্ষণ করেছিলেন স্থানীয় নানজিং হাসপাতালে।

ইচ্ছা ছিল, পরবর্তী সুবিধাজনক এক সময়ে সন্তান নেবেন। কিন্তু অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর আইনি জটিলতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে আদৌ তাদের সন্তানের ভ্রুণ পৃথিবীর মুখ দেখতে পারবে কিনা। নিহত স্বামী-স্ত্রীর বাবা-মায়েরা চাচ্ছিলেন তাদের নাতি বা নাতনির জন্ম হোক।

কিন্তু যে হাসপাতালে ভ্রুণ সংরক্ষিত ছিল তাদের সাথে আইনি দ্বন্দ্ব তৈরি হয় তাদের। ছেলে-মেয়েদের সন্তানের ভ্রণের মালিকানা আসলে কার? দাদা-দাদি বা নানা-নানি কি সেই ভ্রণের অধিকার দাবি করতে পারেন? এই প্রশ্নের মিমাংসা করতে চার বছর ধরে লড়তে হয়েছে আদালতে। আগে কোথাও এমন ঘটনার নজির না থাকায় আইনি দিক নিয়ে গলদঘর্ম ছিলেন বিচারকরাও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সমাধান হয়েছে। হবু দাদা-দাদি এবং নানা-নানি চারজন মিলে ভ্রুণকে পৃথিবীর মুখ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। গত ডিসেম্বরে ভূমিষ্ট হয় এক ছেলে সন্তান।

তবে চীনে ‘সারোগেসি’ (গর্ভ ভাড়া দেয়া) বৈধ না হওয়ায় লাওয়াসে যেতে হয়েছে দাদা-নানাকে। ভ্রুণ সংরক্ষণ করা বিশাল নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ পাত্রটি কোনো বিমান কর্তৃপক্ষ বহনে রাজি না হওয়ায় গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় চীনের প্রতিবেশি দেশটিতে। জন্মের আগে দেখা দেয় আরেক ঝামেলা। লাওসে জন্ম হলে অনাগত নাতির নাগরিকত্ব নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। তাই ভ্রুণ ‘ইমপ্লান্ট’ করার পর ‘মা’কে পর্যটন ভিসায় নিয়ে যাওয়া হয় চীনে।

নির্দিষ্ট সময় পর বাচ্চাটির জন্ম হওয়ার পরও সহজ ছিলনা তার অভিভাবকত্ব পাওয়া। দাদা-দাদি ও নানা-নানির ডিএনএ টেস্ট দেখা হয়েছে আসলেই বাচ্চার ডিএনএর সাথে তাদেরগুলো মিলে কিনা। শেষ পর্যন্ত ৫ বছরের ঝক্কি শেষে নাতির মুখ দেখেছে দুই পরিবার। (সূত্র: বিবিসি)।

Exit mobile version