Site icon Jamuna Television

গাইবান্ধায় রড চুরির অপবাদে ট্রাকের চালক ও হেলপারকে পিটিয়ে জখম

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধায় রড চুরির অপবাদে ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আটক রেখে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর নাম মো. মিঠু হাজী। তিনি মেসার্স শরিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের ভিএইড রোডের মেসার্স শরিফ ট্রেডার্সে এই ঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন কল পেয়ে একটি গোডাউন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।

বর্তমানে আহত ট্রাক চালক হাফিজুর রহমান ও হেলপার সেকেন্দার আলী গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের দুজনের বাড়িই রংপুরের মিঠাপুর উপজেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার দুপুরে শহরের ভিএইড রোডের শরিফ ট্রেডার্সের রড বোঝাই ট্রাক নিয়ে আসে রংপুর মিঠাপুকুর এলাকার ড্রাইভার হাফিজুর রহমান ও হেলপার সেকেন্দার আলী। এ সময় ৫১০ কেজি ঘাটতি হওয়ায় তাদেরকে আটক রেখে টাকার জন্য চাপ দেয় শরিফ ট্রেডার্সের মালিক মিঠু হাজী। পরে চালক ও হেলপার তাদের বাড়িতে মোবাইলে ফোন করে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে মালিক মিঠু হাজীকে দেয়। কিন্তু তারপরেও চালক হাফিজুর ও হেলপার সেকেন্দারকে একটি গোডাউনে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে মিঠু হাজি, ম্যানেজার লাভলু ও কর্মচারী রায়হানসহ ৫-৭ জন। খবর পেয়ে ট্রাকের মালিক মামুনুর রশিদ বকুল তাদেরকে উদ্ধার করতে এলে তাকেও মারপিট করে আটক রাখা হয়। পরে কৌশলে তিনি জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পরে রাত ১০টার দিকে শরিফ ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন পুলিশ।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চালক হাফিজুর রহমান ও হেলপার সেকেন্দার আলীর অভিযোগ, ৫১০ কেজি রড চুরির অপবাদ দিয়ে তাদের কাছে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন মালিক মিঠু হাজী। দাবিকৃত টাকা দেয়ার পরেও তাদের গোডাউন ঘরে দুপুর থেকে আটক রাখা হয়। এসময় মিঠু হাজী, ম্যানেজার লাভলু ও কর্মচারী রায়হানসহ ৫-৭ জন মিলে তাদেরকে রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। মারধরের সময় তারা তাদের কাছে আরও টাকা দাবি করেন।

এদিকে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মিঠু হাজী ও তার লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করাসহ মামলা না করতে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাকের মালিক মামুনুর রশীদ। এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা ও নির্যাতনের ঘটনায় ন্যায্য বিচার দাবি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে দুপুরে মেসার্স শরিফ ট্রেডার্সে গিয়েও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত মো. মিঠু হাজীকে। পরে মুঠফোনে যোগাযোগ করা হলে মিঠু হাজী বাইরে আছেন জানিয়ে ঘটনাটি মীমাংসা হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে কখন কিভাবে মীমাংসা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি পরে জানাবেন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এছাড়া অভিযুক্ত ম্যানেজার হালিম মুন্সি ও লাভলুর কাছে ঘটনা জানতে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদার রহমান বলেন, ট্রাকের চালক ও হেলপারকে নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েই তাৎক্ষণিক পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় ট্রাকের মালিক ও আহতদের পক্ষ থেকে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেডআই/

Exit mobile version