Site icon Jamuna Television

‘কী ভালো তোমাকে বাসি আমরা, বলো কী করে বোঝাই…’

ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গান। তার মাঝে অনবদ্য এক সৃষ্টি, ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়/ কী ভালো তোমাকে বাসি আমরা, বলো কী করে বোঝাই…’ গানটি। ঐতিহাসিক এই গানটি পরম মমতায় কণ্ঠে তুলেছিলেন প্রবাদপ্রতিম গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

১৯৭২ সালে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গীতিকার আবিদুর রহমানের কথায় সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশগুপ্তের সুরে এই ঐতিহাসিক গানটি সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার শত শত গান দুই বাংলার কোটি মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফিরলেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গাওয়া গানটি গেয়ে আজীবনের জন্য তিনি জায়গা করে নেন বাংলাদেশের হৃদয়ের মণিকোঠায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মাইলফলক এ গানটি আজও বাজে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে।

ওপার বাংলায় বাংলাদেশের অন্যতম অনুরাগী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বঙ্গবন্ধুর কীর্তি গেয়েছেন তার বেশকিছু সাক্ষাৎকারেও। তিনি বিশ্বাস করতেন বাংলার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি কিছু সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘কত গভীরভাবে দেশকে ভালোবাসলে, ভাষাকে ভালোবাসলে তবে এভাবে লড়াই করা যায়! ইতিহাসে তার এ লড়াইয়ের গৌরবগাঁথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যুগ যুগ ধরে এ কথা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বাংলার সংগীত জগতের এক স্বর্ণযুগের অবসান ঘটলো গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ কিংবদন্তি। তার কণ্ঠের জাদুতে মজেছিল কয়েক প্রজন্ম। ৫০ বছরেরও বেশি সময় বিভিন্ন ভাষার ছবিতে করেছেন প্লে-ব্যাক। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদী সঙ্গীতেও সমান পারদর্শী ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

১৯৩১ সালে দক্ষিণ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্য সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সন্ধ্যার সঙ্গীত শিক্ষার মূল কাণ্ডারি ছিলেন তার দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। ১৯৪৮ সালে প্রথমবারের মতো করেন সিনেমায় প্লেব্যাকও। রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গীত পরিচালনায় তিনি কণ্ঠ দেন, ‘অঞ্জনগড়’ সিনেমার গানে। একই বছর আরও তিনটি আধুনিক গান রেকর্ড করে সঙ্গীতজগতে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

১৯৫০ সালে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান বাংলা মৌলিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা। ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করেন তিনি। শচীন দেব বর্মণের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল তার বম্বে সফর। তবে মুম্বাইয়ে প্রথম প্লেব্যাকের সুযোগ হয় অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ সিনেমায়। সবশেষ তিনি আলোচনায় আসেন ভারতের ৪র্থ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ প্রত্যাখ্যান করে।

/এসএইচ

Exit mobile version