
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে একটি মামলায় আদালতে দুই রকম প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। আশুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে বদলি হয়ে রাঙামাটি জেলায় কর্মরত আছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ৩ তারকা হোটেল আরজে টাওয়ারের একটি মামলায় আদালতের চাওয়া প্রতিবেদন ও অভিযোগপত্রের প্রতিবেদনে দুই রকম তথ্য দেন বলে অভিযোগ।
আদালতে দেয়া প্রতিবেদন ও অভিযোগপত্রের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৬ অক্টোবর র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ৩ তারকা মানের হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের বারে অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে ৩৯ জনকে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এসময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ ও বিয়ার উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম তদন্ত করে গত ২০ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে বলা হয়, আশুগঞ্জে আরজে টাওয়ারকে জেলা প্রশাসন ‘এফ’ মানের লাইসেন্স ইস্যু করে এবং বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ‘তিন’ তারকা মান প্রদান করে। এই হোটেল ও রিসোর্টটি ২০১৯ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে বারের লাইসেন্স প্রাপ্ত হয় এবং এতে মদ জাতীয় পানীয় ৩ হাজার লিটার মজুদ করার অনুমতি পায়।
আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া মদ ও মদ জাতীয় পানীয়কে বৈধ উল্লেখ্য করেন। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) একই মামলায় পুলিশ পরিদর্শক মনিরুলের আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে উদ্ধার হওয়া মদ ও মদ জাতীয় পানীয়কে অবৈধ উল্লেখ করেন। এছাড়াও আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে পরিদর্শক হিসেবে স্বাক্ষর করলেও অভিযোগপত্রে মনিরুল ইসলাম উপ-পরিদর্শক হিসেবে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি যতো আ’লীগের বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছে, ততো আমাদের ভোট বাড়ছে: তথ্যমন্ত্রী
যদিও ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে রাঙামাটি জেলায় বদলি করা হয়। যাওয়ার আগে গোপনে এই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন তিনি। অভিযোগের ব্যাপারে রাঙামাটি জেলায় বদলি হওয়া আশুগঞ্জ থানা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, উদ্ধার হওয়া মদ বৈধ ও বিক্রয় করা অবৈধ লিখেছি। আর অভিযোগপত্রে সাব-ইন্সপেক্টর ভুলে লেখা হয়েছে।
এনিয়ে আরজে টাওয়ারের পরিচালক সরওয়ার শফিক তুহিন বলেন, আশুগঞ্জে সরকারের বিভিন্ন মেঘা প্রকল্পে ৫ শতাধিক দেশের বিদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা রিসোর্টের পাশাপাশি বার লাইসেন্স এনে পরিচালনা করে আসছি। লাইসেন্সকৃত মদ-বিয়ার অবৈধ হয় কিভাবে?
তিনি আরও বলেন, কোনো প্রকার ডোপ টেস্ট না করেই মদ সেবনকারী হিসেবে গ্রেফতার করা হয় গ্রাহকদের। আমরা এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আপিল করবো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জজ কোর্টে সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ তানভীর হোসেন কাউছার জানান, একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি মামলায় দুই ধরনের প্রতিবেদন আদালতে দিতে পারেন না। এজন্য তিনি বিচার প্রক্রিয়ায় আদালতের মুখোমুখি করা হতে পারে।
এসজেড/



Leave a reply