Site icon Jamuna Television

রুশ হামলায় টালমাটাল আন্তর্জাতিক বাজার, বাড়তে পারে খাদ্যপণ্যের দাম

ইউক্রেনে রুশ হামলায় অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাজার।

ইউক্রেনে রুশ হামলার একদিন না যেতেই টালমাটাল হয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজার। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, অভিযান দীর্ঘ হলে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে খাদ্যপণ্যের দামে। কারণ, সারা বিশ্বে গম, ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেলের মতো জরুরি খাদ্যশস্যের বড় একটি অংশের যোগান দেয় রাশিয়া ও ইউক্রেন। লড়াই শুরুর পরই তাই আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে গমের দাম।

কেবল আয়তনের দিক দিয়েই ইউরোপের বৃহত্তম দেশ নয়; মহাদেশটির সবচেয়ে বেশি আবাদযোগ্য জমিও ইউক্রেনে। ঈর্ষণীয় উর্বরতা রয়েছে দেশটির কালো মাটিতে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সোনালী ফলন হয় গম, ভুট্টা কিংবা সূর্যমুখীর। খাদ্যশস্যের বিপুল যোগান আসে বলে ইউরোপের রুটির বাক্স খেতাব রয়েছে ইউক্রেনের। অবশ্য শুধু ইউরোপ নয়, দানাদার শস্যে সারা বিশ্বের জন্যই বড় নির্ভরতা দেশটি। গম ও ভুট্টা রফতানিতে ইউক্রেনের অবস্থান চতুর্থ, আর সূর্যমুখী তেল রফতানিতে শীর্ষে তারা। বিশ্বে এ তিন গুরুত্বপূর্ণ শস্যের যোগান দিতে বড় ভূমিকা রাখে রাশিয়াও। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক গমের বাজার অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি। প্রতি বছর যতো গম রফতানি হয়, তার ২৯ ভাগই করে রাশিয়া আর ইউক্রেন। সামরিক সংঘাতে দুই দেশেরই রফতানি বাণিজ্য রয়েছে অনিশ্চয়তায়। আর এরই প্রভাবে রেকর্ড ভেঙেছে গম আর ভুট্টার দাম। চীনের হাং সেং ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ওয়াং ডান বলেন, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কারণে এমনিতেই কিছুদিন ধরে গমের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। লড়াই শুরুর পর তাই দাম আরও বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এতে গম আমদানিতে বিপাকে পড়বে স্বল্প আয়ের দেশগুলো।

অবশ্য কৃষিপণ্যের চেয়েও, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রাশিয়ার গুরুত্ব বেশি দেশটির বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য। গ্যাস ও জ্বালানি তেল উৎপাদনে বিশ্বে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে দেশটি। ইউরোপের জ্বালানির ৪০ শতাংশ চাহিদাই পূরণ করে মস্কো। পশ্চিমা অবরোধে প্রভাব পড়বে এই সরবরাহে, সে শঙ্কায় ৭ বছরের মধ্যে বেড়ে সর্বোচ্চ হয়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ইউরোপের জ্বালানির বিকল্প উৎস নিয়েও শুরু হয়ে গেছে পর্যালোচনা। রাশিয়ার ঝুঁকি বিশ্লেষক ক্রিস ওয়েফার বলেন, ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে তেল-গ্যাসের বিষয়টি মাথায় রাখবে ইউরোপের দেশগুলো। কারণ, রাশিয়ার রফতানি বন্ধ হলে তাদের ওপরও প্রভাব পড়বে।

আরও পড়ুন: পুতিনকে বুঝতে হবে ন্যাটোর কাছেও পরমাণু অস্ত্র আছে: ফ্রান্স

অভিযানের প্রথম দিনই, রাশিয়ার লক্ষ্য ছিলে ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দরগুলো। হামলার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে ওডেসা এবং মারিপোলের সব বন্দরের কার্যক্রম। প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা অবরোধের মুখে পড়েছে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। করোনা মহামারির প্রভাব থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তে দুই সমৃদ্ধ প্রতিবেশীর এমন লড়াই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সারা বিশ্বে।

আরও পড়ুন: রাশিয়া কেন চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখলে আগ্রহী হলো?

Exit mobile version