রুশ আগ্রাসন মোকাবেলায় যুদ্ধ এখন পর্যন্ত কেবল ইউক্রেনে সীমাবদ্ধ থাকলেও উত্তেজনা বাড়ছে গোটা ইউরোপে। লড়াই দীর্ঘ হলে এর পরিসর বৃদ্ধির শঙ্কাও বাড়বে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রণক্ষেত্রে সামান্য একটু ভুলেই যুদ্ধ ছড়াতে পারে অন্য দেশে। পান থেকে চুল খসলেই বিপদ। কারণ হিসেবে বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে অবস্থান ন্যাটো বাহিনীর। এ অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত এড়াতে রুশ বাহিনীর সাথে গোপন হটলাইন চালু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ন্যাটোভুক্ত দেশ না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোটটি ইউক্রেনে সরাসরি কোনো সেনা পাঠায়নি। তবে ইউক্রেনের সীমান্তঘেঁষা সব দেশেই মোতায়েন আছে তাদের হাজার হাজার সেনা। উত্তেজনা বাড়তে থাকায় ইউক্রনের সীমান্ত ঘেঁষা পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় নতুন করে সেনা পাঠিয়েছে ন্যাটো। আগে থেকেই জার্মানি, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ায় অবস্থান করছে জোটের সেনারা। কৃষ্ণসাগরের আশপাশে আছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ।
বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, রুশ বাহিনীর অসাবধানতায় এসব দেশে অবস্থানরত বিদেশি সেনাদের ওপর হামলা হলে সূচনা হতে পারে বড় ধরনের যুদ্ধের। এমন পরিস্থিতির শঙ্কায় আগেভাগেই রুশ বাহিনীর সাথে বিশেষ হটলাইন চালু করেছে বাইডেন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেনা কর্মকর্তা বেন হজ বলছেন, আমি ২০১৪ থেকে ১৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপে ছিলাম। তাই সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেকটা অনুমান করতে পারছি। যেহেতু পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো সেনারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। তাই এমন হামলার ঝুঁকি খুবই বাস্তব।
কিয়েভে পুতিন বাহিনী অভিযান চালানোর আগেই অনেকে সতর্ক করে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে গোটা ইউরোপে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বল্প সময়ে সংঘাত শেষ হলে যুদ্ধ ছড়ানোর ঝুঁকি কম। তবে ইউক্রেন যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে তাতে সংঘাত দীর্ঘ হওয়ারই শঙ্কা অনেকের। যুক্তরাজ্যের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক জেমস নিক্সি মনে করছেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ইউক্রেনের সাথে এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে। সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়বে রাশিয়া। কারণ যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে তাতে রিজার্ভ থেকে চলতে হবে পুতিন সরকারকে। তাই নিজেদের স্বার্থেই যুদ্ধ বন্ধ করা উচিৎ রশিয়ার।
এদিকে একই কথা বলছেন ফঁরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুলেয় ম্যাকরনও। তিনি মনে করে করেন, এই যুদ্ধ স্থায়ী হবে। ম্যাকরন বলেন, এমনকি যে সব সংকট তৈরি হবে তাও বহুদিন থাকবে। তাই আমাদের অবশ্যই এ জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সংঘাত দীর্ঘ হলে পুতিনের অবস্থা বেসামাল হয়ে পড়বে মনে করছেন কেউ কেউ। এরই মধ্যে ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিরোধিতা করে রাশিয়ার ভেতরেও শুরু হয়েছে পুতিন বিরোধী আন্দোলন।
/এডব্লিউ
Leave a reply