Site icon Jamuna Television

বিজ্ঞানের ইতিহাস নতুন করে লিখেছেন ভারতের যেসব মন্ত্রী

লাখো বছর আগে মহাভারতের সময় ইন্টারনেট-স্যাটেলাইট ছিলো। ভারতীয়রা প্রাচীন আমলেই এসব প্রযুক্তি আবিস্কার করেছিলো। এমন বক্তব্য দিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। অনেকেই উপহাস-ঠাট্টার ছলে করছেন নানা চটুল মন্তব্য। তবে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নিয়ে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের এমন বিতর্কিত মন্তব্য কিন্তু নতুন কিছু নয়। গত কয়েক বছর ধরেই এসব নিয়ে নানা রকম তত্ত্ব দিয়ে আসছেন বিজেপি নেতারা। কী ছিলো সেসব তত্ত্ব, একটু দেখে নেয়া যাক।

রামায়নের উড়োজাহাজ

২০১৭ সালের  সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের জুনিয়র শিক্ষা মন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেন, প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের প্রাচীন ভারতের বৈজ্ঞানিক আবিস্কার সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, হিন্দু পুরাণ রামায়নেই প্রথম বিমানের উল্লেখ করা হয়। তিনি আরো বলেন, রাইট ব্রাদার্সের আবিস্কারের ৮ বছর আগে শিবাকর বাবুজি তালপাড়ে নামে এক ভারতীয় বিমান তৈরি করেছিলেন।

এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে মুম্বাই নগরীতে ‘ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে’ এক বক্তা অবসরপ্রাপ্ত পাইলট আনন্দ বোড়াস বলেন, ৭ হাজার বছর আগে ভরদ্বাজ নামে এক সাধু মহাকাশযান তৈরি করেছিলেন যাতে চড়ে তিনি গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ঘুরে বেড়াতেন। সেই মহাকাশযানে ৪০টি ইঞ্জিন থাকতো। মহাকাশচারি বিশেষ ধরনের পোশাক পরতে মহাশুন্যে ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে।

গণেশের প্লাস্টিক সার্জারি

২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুম্বাইয়ে চিকিৎসকদের এক সম্মেলনে বলেছিলেন, প্রাচীন আমল থেকেই ভারতে প্লাস্টিক সার্জারির প্রচলন রয়েছে। হিন্দুদের দেবতা গণেশের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সেই সময় ভারতে নিশ্চিতভাবেই প্লাস্টিক সার্জন ছিলো, যারা গনেশের শরীরে হাতির মাথা স্থাপন করেছিলেন। সেখান থেকে বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক সার্জারি চলন শুরু হয়েছে।

সেতু নির্মাণে রামের প্রকৌশল জ্ঞান

২০১৭ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি এক প্রকৌশল ইন্সটিটিউটে গিয়ে, রামের প্রকৌশল জ্ঞানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সেই আমলে রাম কীভাবে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত সেতু বানালেন, তা একটা বিস্ময়। কাঠবিড়ালী পর্যন্ত ওই সেতু তৈরীর কাজে নিয়োজিত হয়েছিলো। সাগরে এখনও সেই রাম সেতুর চিহ্ন রয়েছে।

নি:শ্বাসে অক্সিজেন ছাড়ে গরু

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী বাসুদেব দেভনানি বলেন, গরুই হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী যে কিনা শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং অক্সিজেনই ত্যাগ করে। গরুর যে বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব আছে, তা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। অবশ্য কোন গবেষণার প্রেক্ষিতে এমন দাবি, তার উল্লেখ করেননি মন্ত্রী।

যদিও বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলে উল্টো কথা। একটা গরু থেকে বছরে ৭০ থেকে ১২০ কেজি মিথেন গ্যাস নির্গত হয়, যা কিনা কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে ২৩ গুন বেশি ক্ষতিকর। জাতিসংঘের ২০০৬ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের অস্তিত্বের জন্য হুমকি গ্রিন হাউজ গ্যাসের একটা বড় অংশ আসে গরু থেকে।

Exit mobile version