Site icon Jamuna Television

যেসব গল্প বলা হয় না নারী দিবসেও

জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার সংগ্রামে ব্যস্ত স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী নারীরা। পরিবার নিয়ে একটু ভালো থাকার আশায় ছুটছেন অবিরাম। যাদের একেকজনের গল্প একেকরকম। চট্টগ্রামে এমন সংগ্রামী এবং ভাগ্য বিড়ম্বিত নারীর সংখ্যা অনেক। নারী দিবসে সফলদের নিয়ে কথা হলেও আড়ালে থেকে যায় এসব সংগ্রামী নারীদের গল্প। এই প্রতিবেদনে দেখে নেয়া যাক হার না মানা এরকমই কয়েকজন নারীর গল্প।

প্রায় ১ যুগ ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর সিআরবি এলাকায় চা বিক্রি করছেন সালমা বেগম। তার আয় দিয়েই চলছে পঙ্গু স্বামীর চিকিৎসা এবং চার সন্তানের লেখাপড়া। সালমা মনে করেন এটা শুধু চায়ের দোকান নয়, তার জীবিকা পরিচালনার একমাত্র অবলম্বন।

রায়হানা বেগম নামে এই নারীর গল্প কিছুটা ভিন্ন। স্বামী চলে যাবার পর গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চালান। একমাত্র মেয়ে এবার এসএসসি পাশ করে ভর্তি হয়েছে কলেজে। রায়াহানা জানালেন, অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে তার। সংসার করেছেন মাত্র দশ বছর। এরপর একমাত্র মেয়ের পড়াশোনার জন্য সংগ্রামকেই জীবিকার পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

পোশাক কারখানার নারী কর্মীদের জীবন সংগ্রামের চিত্রও অনেকটা একই। স্বামী সন্তান নিয়ে একটু ভালো থাকতে, দুবেলা দুমুঠো খাবার যোগাড় করতে অবিরাম ছুটে চলা। পোশাক শ্রমিক জুলেখা জানালেন, বিয়ের আগে বাবা ছিলেন না বলে সংসার চালাতে এই পেশায় আসেন তিনি। আর বিয়ের পর স্বামীর ওপর চাপ কমাতে, সংসারের বোঝায় সমান ভাগ নিতে এখনও জুড়ে চলেছেন কাপড়ের টুকরা। সেলাই করে চলেছেন ছিন্ন ভাগ্য।

ইট ভাটার শ্রমিক সুমা আকতার স্বামীর সাথে কাজ করেন ইট ভাটায়। সুমা বললেন, কঠিন এ কাজ বেছে নেয়ার কারণ, স্বামী এবং সন্তানের সাথে কাজ করার সুযোগ আছে। আরেকটু সহজ কাজ বেছে নিতে হলে হয়তো সন্তানের সাথে কাজ করা হবে না, তাই এ পথ বেছে নেয়া তার।

নারী দিবস আসে, নারী দিবস যায়, বিশ্বজুড়ে বদলায় নারীর ক্ষমতায়নের চিত্র, তৈরি হয় নারীদের সফলতার অনেক গল্প; তবে স্বল্প আয়ের এসব নারীদের জীবনযুদ্ধ যেন শেষ হওয়ার নয়।

/এডব্লিউ

Exit mobile version