Site icon Jamuna Television

রাশিয়ার তেল না পেয়ে ইরানের সাথে ঝামেলা মেটাতে চায় পশ্চিমারা

ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের মধ্যে ইরানের সাথে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার জন্য তড়িঘড়ি করছে পশ্চিমা বিশ্ব। রাশিয়াকে চাপে ফেলতে জ্বালানির জন্য ইরানকেই বিকল্প হিসেবে চাইছে তারা। গত কয়েক সপ্তাহের দফায় দফায় বৈঠকের পর শিগগিরই পরমাণু চুক্তি সচলের ইঙ্গিতও দিয়েছে সব পক্ষ। তবে রাশিয়ার ওপর একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা যেন ইরান-রাশিয়া স্বাভাবিক বাণিজ্যে বাধা না দেয় সে গ্যারান্টি চায় মস্কো।

কয়েক মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সোমবারই ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেখায় পৌঁছায় তেলের দাম। এই অস্থিরতার কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি সরবরাহকারীদের অন্যতম রাশিয়া। একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় কোণঠাসা করার চেষ্টা করলেও তেলের জন্য দেশটির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারেনি পশ্চিমারা। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ইরানকে প্রধান বিকল্প হিসেবে ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা। তবে সেজন্য ফিরতে হবে ২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তিতে।

জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পরই ইরান-ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যকার চুক্তিটি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভিয়েনায় দফায় দফায় বৈঠকের পর আসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। আর এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাশিয়া।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে হঠাতই বদলে গেছে মস্কোর অবস্থান। জেসিপিওএ চুক্তি সচল হলে ইরানের সাথে স্বাভাবিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের নিশ্চয়তা চায় তারা।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার ঢল এখনও বোধহয় শেষ হয়নি। ইরানের সাথে বাণিজ্য, অর্থনীতি ও বিনিয়োগ সহায়তায় এসব নিষেধাজ্ঞা প্রভাবিত করবে না এমন নিশ্চয়তা চান তারা। তিনি বলেন, চুক্তির কোনো সুবিধা থেকে যাতে বঞ্চিত না হই সেজন্য লিখিত গ্যারান্টি চাই।

রাশিয়ার দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের দাবি, পরমাণু চুক্তির সাথে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্পর্ক নেই। আপত্তি জানিয়েছে চুক্তিতে ফিরতে মরিয়া ইরানও। কোনো নিষেধাজ্ঞার কারণেই শান্তিপূর্ণ পরমাণু চুক্তি বাধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয় বলে দাবি তাদের।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদেহ বলেন, এটা স্পষ্ট ভিয়েনা আলোচনা নিজের পথেই এগিয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরমাণু চুক্তি কোনো নিষেধাজ্ঞার কারণে সীমিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এক সময় দৈনিক ৩৭ লাখ ব্যারেল তেল রফতানি করতো ইরান। দিনে ২০ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলনের সক্ষমতা আছে দেশটির। পরমাণু চুক্তির মধ্য দিয়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আবারও মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যারেল তেল সরবরাহ করতে পারবে দেশটি। লাগাম পড়বে দামেও। সে আশাতেই জেসিপিওএ পুনরুদ্ধারে উঠে পড়ে লেগেছে পশ্চিমারা।

/এডব্লিউ

Exit mobile version