Site icon Jamuna Television

ইতালির উপকূলে রহস্যময় প্রমোদতরী ‘শেহেরজাদে’

‘শেহেরজাদে’, দৈর্ঘ্যে দুনিয়ার সেরা এবং বড় প্রমোদতরীর প্রায় সমান। সুপার ইয়ট বিশেষজ্ঞ একটি সংস্থার মতে, দাম কম করে হলেও ৭০ কোটি ডলার। ইতালির উপকূলে থাকা এই প্রমোদতরী নিয়ে ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে রহস্য। জাহাজকর্মীদের ফিসফাসে কান পাতলে শোনা যায়, এটির মালিক স্বয়ং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

এই প্রমোদতরীটি ইতালির মারিনা ডি কারারা উপকূলে রয়েছে, গত এক বছরের কিছু বেশি সময় ধরে; মেরামতের কাজে। কিন্তু যারা মেরামতের কাজ করছেন, তারা খুবই অবাক প্রমোদতরীটি ঘিরে অতি গোপনীয়তায়।

প্রায়শই ইতালির উপকূলে অনেক জাহাজ আসে, মেরামতের কাজে। তবে শেহেরজাদেকে সাধারণের নজর থেকে আড়ালে রাখতে টানা হয়েছে ধাতব পর্দা। এমনকি শেহেরজাদের নাম গোপন রাখারও চেষ্টা করা হয়েছিল।

শেহেরজাদের সমস্ত কর্মীই রাশিয়ান, কেবল চালক ছাড়া। প্রমোদতরীর মালিকের খোঁজে কিছু ইতালীয় তদন্তকারী গিয়েছিলেন চালক গাই বেনেট পিয়ার্সের কাছে। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, শেহেরজাদের মালিক কি রুশ প্রেসিডেন্ট? স্পষ্ট কোনো জবাব দেননি। তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তিনি নিজে অন্তত কখনও পুতিনকে ওই প্রমোদতরীতে ছড়তে দেখেননি।

শেহেরজাদে। ছবি সংগৃহীত।

কিন্তু শেহেরজাদের মালিক কে? পিয়ার্স তা জানেন না, সেটা কি সম্ভব? জবাবে এই চালক জানিয়েছিলেন, তার কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। নাম বলা তার পক্ষে সম্ভব নয়।

তবে পিয়ার্স এটুকু ইঙ্গিত দিয়েছেন, মালিক এমন কেউ নন, যার বিরুদ্ধে কোনো রকম আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর পুতিন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এর জেরে ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই রুশ জাহাজ ও প্রমোদতরীর দখল নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকার।

ফ্রান্সে রুশ প্রমোদতরী আমোরে ভেরো’র দখলও নিয়েছে দেশটির সরকার। তবে কাকতালীয়ভাবে আমোরে ভেরো যে সংস্থার তৈরি, সেই ইম্পেরিয়ালই শেহেরজাদেকেও তৈরি করেছে। তাই শেহেরজাদের মালিকের পরিচয় জানতে ইতালির তদন্তকারীরা ইম্পেরিয়ালের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল। তারা জানিয়েছে, শুধু আমোরে ভেরো বা শেহেরজাদে কেন, রাশিয়ার অধিকাংশ প্রমোদতরীরই নির্মাতা সংস্থাটি। তবে কাদের জন্য এসব সুপার ইয়ট তৈরি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে তারা ব্যবহারকারীর জন্য গোপনীয়তার শর্ত মেনে চলে।

আলো ছড়াচ্ছে শেহেরজাদে। ছবি সংগৃহীত।

পুতিনের পাশাপাশি রাশিয়ার ধনকুবেরদের উপরেও জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তালিকায় রয়েছে ধনকুবের ওলিগার্সের প্রতিষ্ঠান, রয়েছেন রুশ ইস্পাত শিল্পের প্রভাবশালী শিল্পপতি অ্যালেক্সেই মর্দাশভ, পুতিনের বন্ধু তেল ব্যবসায়ী গেনাডি টিমচেনকো। এদের প্রত্যেকেরই প্রমোদতরীর দখল নিয়েছে ইতালির সরকার। বাকি শুধু শেহেরজাদে। কিন্তু এটির মালিকানার পরিচয় নিয়ে সংশয় কিছুতেই কাটছে না।

প্রমোদতরীর প্রতি পুতিনের আগ্রহ বেশ। এটা আগেই প্রকাশ পেয়েছে। পুতিনের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকের সময় সুযোগ হলে তা সাধারণত কোনো ইয়টেই আয়োজন করেন রাষ্ট্রপ্রধানেরা। সেই ইয়টপ্রেমী রাজনীতিবিদের নিজের ইয়ট নেই! তা কি হতে পারে? পুতিন নিজে অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি ঠিক ততটা ধনী রাষ্ট্রপ্রধান নন।

ইয়টে ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত।

ইতালির জাহাজকর্মীরা জানিয়েছেন, জাহাজের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই কারও। শেহেরজাদার অন্দরসজ্জা কেমন তা-ও জানার উপায় নেই।

/এমএন

Exit mobile version