Site icon Jamuna Television

‘মাঝে মাঝে মনে হয় পুরো পৃথিবীটাই আমার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র’

ভিক্টোরিয়া নাজির, যার ২৪ বছরের জীবনের পুরোটাই যুদ্ধ আর শরণার্থী হবার আখ্যান।

ভিক্টোরিয়া নাজিরের ২৪ বছরের জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে যুদ্ধ দেখে আর এর প্রভাবে শরণার্থী হয়ে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে তার পরিবার ফিলিস্তিন ছেড়ে নব্বইয়ের দশকে আশ্রয় নিয়েছিল সিরিয়ায়। সেখানেও যুদ্ধ বাধলে ভিক্টোরিয়ার পরিবারকে বরণ করতে হয় গৃহহীনের জীবন। শেষমেষ যখন মায়ের দেশ ইউক্রেনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ভিক্টোরিয়া, তখনই যুদ্ধ বেধেছে সেখানেও। এ নিয়ে আক্ষেপ করে সিরিয়ান এই তরুণী বলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় পুরো পৃথিবীটাই আমার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র!

এক জীবনে ক’টা যুদ্ধ দেখে মানুষ? কিংবা কতবার শরণার্থী হতে পারে? এর উত্তর হয়তো সবচেয়ে ভালো জানা আছে সিরিয়ান তরুণী ভিক্টোরিয়া নাজিরের। তার বাবা ফিলিস্তিনি, মা ইউক্রেনিয়ান। যুদ্ধের থাবায় ফিলিস্তিন ছেড়ে সিরিয়া হয়ে আবার ইউক্রেনে ফেরার পরিকল্পনা করছিলেন যখন ভিক্টোরিয়া নাজির, তখন সেখানেও শুরু হয়েছে যুদ্ধ। ভিক্টোরিয়া বলেন, ভেবেছিলাম লেখাপড়া শেষ হলেই ইউক্রেনে ফিরবো। দেশটা উন্নত এবং নিরাপদ। কিন্তু এখন সেখানে চলছে যুদ্ধ। জানি না কবে শেষ হবে। সেখানে যেতে পারবো কিনা সেটাও জানি না। আসলে আমার কপালটাই খারাপ।

নাজিরের বাবা-মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এখন ইউক্রেনে। তবে চলমান রুশ আগ্রাসনের কারণে যেকোনো সময় আবারও শরণার্থী হতে পারে তার পরিবারের সদস্যরা। সেই শঙ্কার কথা জানিয়ে ভিক্টোরিয়া বলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় পুরো পৃথিবীটাই আমার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র। এখন পর্যন্ত তিনটি দেশের নাগরিক হয়েছি অথচ থাকতে পারবো এমন নিশ্চয়তা কোনোটাতেই নেই।

দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভিক্টোরিয়া যেকোনো মূল্যে ফিরতে চান ইউক্রেনে। তিনি বলেন, ইউক্রেনে আমার অনেক স্মৃতি আছে। জানি না, যুদ্ধের কারণে সেগুলোর কতটা টিকে থাকবে। তবে যেকোনো মূল্যে আমি আবারও সেখানে যেতে চাই।

শৈশব-কৈশোর পুরোটাই কেটেছে তার যুদ্ধ দেখে। ইউক্রেনের সংঘাত ভিক্টোরিয়ার জীবনে এনেছে আরেকটা যুদ্ধ। ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধবিগ্রহ দেখা এই তরুণীর জীবনে খুব শিগগিরই যে স্বাভাবিকতায় ফিরছে না, তা বলা যায়।

আরও পড়ুন: সাময়িক অস্ত্রবিরতিতে উদ্ধার ৩০ হাজার ইউক্রেনীয়

এম ই/

Exit mobile version