Site icon Jamuna Television

মারিওপোলের বাঙ্কারে আশ্রিতের সাথে বাড়ছে ক্ষুধা ও সংক্রমণ

রুশ হামলার আগে ও পরে মারিওপোলের রাস্তা। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিওপোলের বাঙ্কারে হাজার হাজার ইউক্রেনীয়র দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়। আশ্রিতের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে দানা বাধছে ক্ষুধা ও সংক্রমণ। বিবিসির সাথে আলাপচারিতায় ৩৯ বছর বয়সী চিকিৎসক আনাস্তাসিয়া পনোমারেভা বলেন, শ্র‍্যাপনেলের আঘাতে এখানে থাকা অনেকের শরীরেই পচন ধরেছে। অবস্থা খুবই গুরুতর। কারণ যারা বহুতল ভবনের নিচে এসব বাঙ্কারে এসে আশ্রয় নিতে পেরেছে, তাদের বেশ লম্বা সময়ই এখানে থাকতে হবে। আর অন্য কোথাও যাওয়া একদমই সম্ভব নয়।

রুশ সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ দখল করে রেখেছে মারিওপোল। শহরটির ৪ লাখের বেশি বাসিন্দা এখনও লুকিয়ে ও আটকে রয়েছেন বিভিন্ন বাঙ্কারে। তাদের কাছে খাদ্য, পানীয় এবং চিকিৎসার সরঞ্জামাদি পৌঁছানোও সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া কিছু রাস্তা এতটাই ভয়াবহ যে, সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়াও অসম্ভব। গণকবরে সমাহিত করা হচ্ছে যুদ্ধে নিহত অনেক সামরিক ও বেসামরিক ইউক্রেনীয়কে। নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুশ হামলায় মারিওপোলে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪০০ বেসামরিক মানুষ।

সংখ্যায় মারিওপোলের ক্ষয়ক্ষতি। সূত্র: বিবিসি

ভবনের নিচে বাঙ্কারে আশ্রয় নেয়া ইউক্রেনীয়দের দিনের পর দিন থাকতে হচ্ছে মানবেতর অবস্থায়। ঠাণ্ডা ও অন্ধকারে মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে তারা। মাঝে মাঝে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসে তারা দিনের আলোর সন্ধানে। আনাস্তাসিয়া পনোমারেভা বলেন, দিন দিন অবস্থা খারাপের দিকেই যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু চিকিৎসা দেয়ার কিছুই নেই এখানে।

শহরটিতে প্রবেশের অনুমতি পায়নি কোনো মানবাধিকার সংস্থার পাঠানো সহায়তা। মারিওপোলের ডেপুটি মেয়র সের্গেই ওরলভ বলেন, প্রতি ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবার, পানি, চিকিৎসা সেবা, ইনসুলিন, শিশু খাদ্য-কিছুই নেই এখানে। তিনি জানান, ত্রাণ সহায়তা নিয়ে আসা গাড়ি শহরটিতে প্রবেশের জন্য ৪ দিন অপেক্ষা করেও পায়নি রুশদের অনুমতি। সের্গেই ওরলভ বলেন, আমি অনেকগুলো ফোনকল পেয়েছি। যেমন, একজন মা জানিয়েছেন, তার কোলের সন্তানটি ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। আটকে আছেন তারা বাঙ্কারে। কিন্তু কীইবা করার আছে আমার! দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা কিছুই করতে পারছি না।

আরও পড়ুন: ‘মাঝে মাঝে মনে হয় পুরো পৃথিবীটাই আমার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র’

এম ই/

Exit mobile version