Site icon Jamuna Television

কেন কাগজের অভাবে পরীক্ষা নিতে পারছে না শ্রীলঙ্কা? কী অবস্থা দেশটির অর্থনীতির?

কাগজ কিনতে না পারায় পরীক্ষা বাতিল হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায়। গত কয়েকদিনে চরম অর্থনৈতিক সংকটে কোণঠাসা দেশটি। তলানিতে ঠেকেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আমদানি পণ্যের অর্থ পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছে লঙ্কান সরকার। আর এর ফলে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে নিত্যপণ্যের দাম। খাবার, ওষুধ, জ্বালানিসহ অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে দেশটিতে। এমনকি তেলের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কমপক্ষে ২ জনের মৃত্যু হওয়ারও খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

এছাড়া বিদ্যুৎ সংকটের ফলে রাতের বড় অংশই বিদ্যুৎবিহীন থাকে শ্রীলঙ্কা। দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতিই যেন এমন অন্ধকারে ডুবে আছে। এর প্রভাবেই ক্লাস নাইন, টেন ও ইলেভেনের প্রায় ৪৫ লাখ পরীক্ষার্থী টার্ম পরীক্ষায় বসতে পারলো না সোমবার। কাগজ সংকটে পরীক্ষাই বাতিল করে দিতে হয়েছে দেশটিতে। আর বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ স্কুল-কলেজ, অস্তিত্ব সংকটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও।

চাল, ডাল, গুঁড়া দুধ, চিনির মতো খাদ্যপণ্যেরও তীব্র সংকট দেশটিতে। হাসপাতাল-ফার্মেসিতে ওষুধের জন্য হাহাকার। সকাল থেকেই লম্বা লাইন পড়ে পেট্রোল স্টেশনে। জ্বালানির অভাবে বন্ধ বেশিরভাগ গণপরিবহন। দেশটির বাস মালিক সংগঠনের একজন নেতা জানালেন, তেলের জন্য লম্বা সময় লাইনে থাকা লাগে। তারপরও তেল পাওয়া যায় না। ওই মালিক নেতা বলেন, কাল আমাদের ২৫ শতাংশ বাস রাস্তায় নামাবো। সারাদেশে মাত্র ৪ থেকে ৫ হাজার বাস নামানো সম্ভব বলেও জানালেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪০ কোটিরও কম। অথচ চলতি বছর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার। রিজার্ভের ঘাটতি মোকাবেলায় আমদানি সংকোচনের নীতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। এতে নিত্যপণ্যের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। নিরুপায় হয়ে আইএমএফের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মিত্র দেশগুলোর দ্বারস্থ লঙ্কান সরকার।

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তার এমন সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতে। তিনি বলেন, সবার আগে অনুরোধ, আমি যে পদক্ষেপ নেবো তার ওপর ভরসা রাখুন। আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর পাশাপাশি প্রতিবশী দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই একটি পথ বের হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে নাগরিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আপনাদের দায়িত্বটা আশা করি বুঝতে পারছেন।

রাজাপাকসের অনুরোধ যাচাই করে দেখবে আইএমএফ। সম্প্রতি জরুরি খাবার ও ওষুধের জন্য শ্রীলঙ্কাকে ১শ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে ভারত। এদিকে কলম্বো অন্যতম ঋণদাতা চীনের কাছে সাহায্য চাইলেও এখনও তাতে সাড়া দেয়নি বেইজিং।

/এডব্লিউ

Exit mobile version