Site icon Jamuna Television

যৌতুক না পেয়ে চুল কেটে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় হাছিনাকে

অভিযুক্ত ফিরোজ হোসেন (বামে) ও নির্যাতিতা গৃহবধূ।

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:

যৌতুকের দাবিকৃত চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় গৃহবধুর চুল কেটে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। নির্যাতনের বিচার চেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশের দারস্থ হলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ আদালতে মামলা দায়ে করেছেন।

মামলা করার প্রায় ১ মাস পার হলেও কোনো বিচার না পাওয়ায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, আদালত থেকে মামলার বিষয়ে থানায় কোনো নির্দেশনা আসেনি।

জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারী নওগাঁর রানিনগর উপজেলার মধুপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে ফিরোজ হোসেন পাশের ভান্ডারপুর গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে হাছিনা বেগমকে (২৬) বিয়ে করেন। বিয়ের দিন জামাতাকে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসা করার জন্য ১ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন হাসিনার বাবা। কিছুদিন পর থেকেই ফিরোজ হোসেন আরও ১ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য তার স্ত্রী হাছিনা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। হাসিনা দাবি মেনে না নেওয়ায় স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন তার ওপর নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী ফিরোজ হোসেনের সাথে হাসিনার চরম বাকবিতণ্ডা হয়। প্রতিপক্ষ হিসেবে মামা শ্বশুর ফজলু ও খালা শাশুড়ি শেফালী বেগম হাসিনাকে নির্যাতন করে।

নির্যাতনকারীরা হাছিনাকে এলোপাতারি মারপিট করলে একপর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পরে। এসময় প্রকাশ্যে স্বামী ফিরোজ হোসেনসহ অন্যরা কাঁচি দিয়ে হাসিনার চুল কেটে দেয়। পরে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। তিনি এখন দরিদ্র বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন।

নির্যাতনের শিকার হাসিনা জানান, ঘটনার পরদিন সকালে রানিনগর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা বা অভিযোগ নেয়নি। পরে নিরুপায় হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালত-১ এ মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার চেষ্টার কথা অস্বীকার করেন রানিনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ। তিনি বলেন, গৃহবধূ হাসিনা বা তার পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

এদিকে গৃহবধুর বাবা হোসেন আলী বলেন, মামলা দায়ের করা হলেও আসামিকে করা গ্রেফতার হয়নি। তবে রানিনগর থানার ওসি জানান, আদালতে করা মামলার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা বা তদন্তের নির্দেশনা পাননি তারা। আদালতের নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/এডব্লিউ

Exit mobile version