Site icon Jamuna Television

ঢাকার বুকে যে বিশাল অরণ্য

শওকত মঞ্জুর শান্ত:

তিলোত্তমা ঢাকা! ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আর গতিশীল উন্নয়নের এই সময়ে ঢাকা শহরের যেদিকেই চোখ পড়ে কেবল ইট-কাঠের জঞ্জাল, ট্রাফিক জ্যাম আর মানুষের মিছিল। দু’দণ্ড বিশ্রাম কিংবা সবুজ দেখার সুযোগ যেন ক্রমেই পালাচ্ছে শহর ছেড়ে। এত সব যান্ত্রিকতার ভিড়ে মিরপুরে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান আগলে রেখেছে সবুজের সমারোহ। বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে বহুল পরিচিত এই সবুজের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে আসেন অনেকেই।

দুদিনের ছুটি পেলেই মানুষ ঢাকা ছাড়ে। কেউ ছোটেন পর্যটন জেলায়, কেউ বা নিজ গ্রামে। চাওয়া একটিই, যান্ত্রিক জঞ্জাল ছেড়ে একটু সবুজ দেখা। কিন্তু ঢাকার বুকেও এক সবুজের অরণ্য আছে, আর চাইলেই যে কেউ একটি দিন কাটিয়ে দিতে পারেন এই অরণ্যে। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, অধিক পরিচিত বোটানিক্যাল গার্ডেন নামেই।

১৯৬১ সালে ২১৫ একর জায়গার উপর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও জীনপুল তৈরির উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয় বোটানিক্যাল গার্ডেন। জীবন্ত এই উদ্ভিদ সংগ্রহশালায় ১৪৩টি উদ্ভিদ পরিবারভুক্ত ১০৪২ প্রজাতির গাছপালা আছে। এর মধ্যে ৩০০ প্রজাতির ৩৩ হাজার ৪১৩ টি বৃক্ষ, ১৮৭ প্রজাতির ১৩ হাজার ৯২ টি গুল্ম, ৪৯৩ প্রজাতির ২০ হাজার ৭৪৬ টি বিরুৎ ও ৫৬ প্রজাতির ১ হাজার ১৯০ টি লতা জাতীয় গাছ আছে। এত এত সবুজের মাঝে এলে মন ভাল হবে যে কারও।

আছে গোলাপের বিশাল সংগ্রহ। প্রায় আড়াইশ প্রজাতির গোলাপের দেখা মিলবে এখানে। বড় সংগ্রহ আছে ক্যাকটাসেরও। এছাড়াও বিরল অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ কেবলমাত্র এখানেই মিলবে। ছোট বড় ১৪টি লেকের ধারে পড়ন্ত বিকেল কাটানোর হাতছানি। ফটোগ্রাফার, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, গবেষক, শ্যুটিং ইউনিটের মানুষের আনাগোনায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে মুখর থাকে এই উদ্যান। গলা ছেড়ে গান গাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগায় অনেক কিশোর।

দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনার জন্য আধুনিকায়নের বেশ কিছু উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে। যদিও এটিকে গবেষণার আধার হিসেবেই রাখতে চায় কর্তৃপক্ষ।

/এডব্লিউ

Exit mobile version