রীতিমত অরাজক পরিস্থিতি মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে। দিন-দুপুরে যে কারও খুন হয়ে যাওয়া দেশটিতে এখন গা-সহা ব্যাপার। মূলত পুরো অঞ্চলটি পরিচিতি মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এবার দেশটিতে গ্যাং সদস্যদের ধরতে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। জরুরি ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে একদিনেই গ্রেফতার হয়েছে হাজারেরও ওপর সন্ত্রাসী।
দোর্দণ্ড প্রতাপশালী গ্যাং সদস্যদের ধরতে এল সালভাদরের নিরাপত্তা বাহিনীর মিশন। রাজধানী সান সালভাদরের অলিগলিতে চলছে অভিযান। গ্যাংগুলোর একের পর এক আস্তানায় হানা দিয়ে হাজারেরও বেশি সন্ত্রাসী আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। দুর্বৃত্তদের দমন না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।
এল সালভাদরের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী গুস্তাভো ভিলাতোরো জানান, শীর্ষ চার গ্যাং নেতাকে ইতোমধ্যে ধরেছেন তারা। এই মন্ত্রী বলেন, দেশের নিরাপত্তা স্বার্থই আমাদের মূল ফোকাস এখন। যতদিন লাগুক, যতদূর যেতে হোক, যতগুলো বাড়িতে যাওয়া দরকার হোক, অভিযান চলবে।
রাজধানীর কারাগারে ঠাসাঠাসি করে রাখা হয়েছে কয়েদিদের। প্রেসিডেন্টের নির্দেশ, দিনে কেবল দুবার খাবার পাবে আটক সন্ত্রাসীরা।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গ্যাং সংস্কৃতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে মধ্য আমেরিকার দেশটিতে। মাদক চোরাকারবার, ডাকাতি, খুন হয়ে উঠেছে দেশটির নিত্যদিনের ঘটনা। সম্প্রতি ব্যাপক হারে বেড়েছে সহিংসতা। গত শুক্র, শনি ও রবি, এই তিনদিনেই গ্যাং-কালচারের বলি হয়ে প্রাণ গেছে ৮৭ জনের। শনিবার একদিনেই খুন হয়েছে ৬২ জন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় রোববার জরুরি অবস্থা জারি হয় দেশটিতে। প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলের প্রস্তাবে নিরাপত্তা বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহারের অনুমোদন দেয় পার্লামেন্ট। জারিকৃত ডিক্রি অনুযায়ী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা যাবে সন্দেহভাজন যে কাউকে।
মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য সতর্ক করছে। তারা বলছেন, নতুন ডিক্রির ফলে খর্ব হতে পারে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার।
এল সালভাদর সরকার অবশ্য বলছে নাগরিকদের স্বাভাবিক চলাফেরার অধিকার থাকবে আগের মতোই। ২০১৫ সালে দেশটিতে গড়ে প্রতি লাখে ১০৩ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। ২০১৯ সালে বুকেলে ক্ষমতায় আসার পর কিছুটা উন্নতি হয়েছিল পরিস্থিতির।
/এডব্লিউ
Leave a reply