Site icon Jamuna Television

ময়লা ফেলতে রাজকীয় রোলস রয়েস গাড়ি ব্যবহার!

গাড়ির রাজা রোলস রয়েস। বিশ্বে গাড়ি-বৈচিত্র্য ফুলে-ফেঁপে উঠলেও এই ব্র্যান্ডকে সমীহ না করে উপায় নেই।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে এই ব্রিটিশ কোম্পানি প্রায় ২০ হাজার গাড়ি তৈরি করে বাজারে ছাড়ে। যার প্রায় ২০ শতাংশ গাড়ি চলে আসে ভারতে।

ব্রিটিশ উপনিবেশে কেবল সাহেবরাই নয়, রোলস রয়েসের ক্রেতা ছিলেন ভারতীয়রাও।

তৎকালীন এই গরিব দেশে সেগুলো ঢুকেছিল দেশীয় রাজা-রাজড়ার আস্তাবলে, থুড়ি গ্যারেজ ঘরে।

ভারতের দেশীয় রাজাদের কাছে এই গাড়ি ছিল উচ্চবিত্তের পরিচয়। ব্রিটিশদের সমকক্ষতা প্রদর্শনের এক অভিজান উপায়।


কিন্তু গাড়ি কিনে আর গাড়ি চড়েই ক্ষান্ত হননি তারা। এমন রাজাও ছিলেন এদেশে যারা এমনভাবে ব্যবহার করেছিলেন এই গাড়ি, যা দেখে হতবাক হন খান সাহেব প্রভুরা।

রাজপুতানার দেশীয় রাজ্যটির নাম আলওয়ার। রাজপুতানার এই বিখ্যাত রাজ্যের রাজা জয় সিংহ ১৯২০ সালে এক কাণ্ড ঘটান। লন্ডনে মেফেয়ার এলাকায় তিনি রোলস রয়েসের শোরুমে একটি গাড়ি দেখেন। সেটি তার পছন্দ হয় এবং শোরুমে ঢুকে তিনি তার খোঁজখবর নিতে শুরু করেন।

কিন্তু সেই শোরুমের ব্রিটিশ সেলসম্যান তাকে এক সাধারণ ভারতীয় ‘নেটিভ’ হিসেবে ধরে নিয়ে অবহেলা প্রদর্শন করেন। জয় সিংহ যারপরনাই অপমানিত বোধ করেন এই ঘটনায়।

পরে তিনি পরিবারবর্গকে নির্দেশ দেন সেই শোরুমে ফোন করে জানাতে যে, তিনি তাদের কাছ থেকে কিছু গাড়ি কিনতে চান। এবং তারা যেন আলওয়ারের রাজা হিসেবে তার পরিচয়টা দিয়ে রাখেন। রাজা শোরুমে হাজির হন পূর্ণ রাজকীয় পোশাকে। সেই সময়ে শোরুমে ৬টি গাড়ি ছিল। রাজা সব গাড়ি কিনে নেন। ডেলিভারি চার্জও মিটিয়ে দেন।

৬টি গাড়ি ভারতে আসে। রাজা তার রাজ্যের পৌরসভাকে নির্দেশ দেন এই গাড়িগুলোকে ময়লা তোলার কাজে ব্যবহারের জন্য। পৌরসভা রাজার আদেশ পালন করতে শুরু করে।

এই খবর বিলেতে পৌঁছলে রোলস রয়েস কোম্পানির কর্তারা শিউরে ওঠেন। তাদের ব্র্যান্ডের সম্মান তো ভূলুণ্ঠিত! তারা রাজার কাছে দ্রুত টেলিগ্রাম করে ক্ষমা চান। সেই সঙ্গে ৬টি নতুন গাড়িও বিনা মূল্যে দিতে চান। পরে রাজার ক্ষোভ প্রশমন হয়।

Exit mobile version