Site icon Jamuna Television

পুলিশের কনস্টেবল পদে পরীক্ষা দেয়া হলো না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাফির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকুরির জন্য ঘর থেকে মা-বাবার দোয়া নিয়ে বের হয়েছিলেন রাফি ভূইয়া। বের হয়ে বাড়ির পাশেই একটি দোকানে গিয়ে ফ্লেক্সিলোড করছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ ধর ধর শব্দ শুনে দোকান থেকে বের হয়েছিলেন। তখন দেখতে পান এক যুবক ছুরি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছে। তখন সে ওই যুবকের গতিরোধ করে হাতে ছুরি থাকার কারণ জানতে চান। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রদীপ (২০) নামের ওই যুবক রাফি ভূইঁয়ার বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান।

পরে রক্তাক্ত অবস্থায় দোকানের পাশেই হুমড়ি খেয়ে বসে যান রাফি। এ সময় আশপাশের মানুষ ও পরিবারের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাফি ভূইয়া ওই এলাকার নিয়ামুল ভূইয়ার ছেলে।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে স্থানীয় আহাম্মদপুর এ.এইচ.এস উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে একই এলাকার স্থানীয় জিসানের বিরুদ্ধে আল রাফি নামে একজনের বোনকে ইভটিজিং করার অভিযোগ ওঠে। জিসানকে দেখে নিতে আল রাফি তার বন্ধু প্রদীপ ও শিমুলকে সাথে নেয়। পরে তারা মিলে জিসানকে নানাভাবে হুমকি দেয়। বিষয়টি সমাধানে আল রাফি ও জিসানের পক্ষে বন্ধুরা সোমবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার লাউর ফতেপুর ইউনিয়নের আহম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে জড়ো হয়। এ সময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে প্রদীপ ছুরি বের করে সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

পরে, উপস্থিত জিসানের লোকজন প্রদীপকে ধরার জন্য ধাওয়া করে। প্রদীপ পালানোর সময় রাফি ভূইয়া তার গতিরোধ করে কারণ জানতে চায়। পরে প্রদীপ যাকে সামনে পাবে তাকে আঘাত করার হুমকি দিয়ে রাফির বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে রাফির মা-বাবা পাগলপ্রায়। বার বার মাটিতে পড়ে বিলাপ করে বলছেন, ছেলে হত্যার বিচার চাই। নিহতের পরিবারের লোকজন জানায়, পুলিশের কনস্টেবল পদে প্রাথমিক যাচাইবাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর মঙ্গলবার লিখিত পরীক্ষার দেওয়ার কথা ছিল। তার অকালমৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীরা।

নিহতের বাবা নিয়ামুল ভূইয়া বলেন, আমার ছেলে কোনো দোষ করেনি। আমার নিরপরাধ বুকের ধনরে একেবারে চিরকালের জন্য শেষ করে দিছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

জেলা পুলিশের নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মূলহোতা প্রদীপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলছে। এর নেপথ্যে কেউ আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জেডআই/

Exit mobile version